জোসুর প্রদর্শনীতে আরবি সংস্কৃতির ঝলক, কসোভোতে সৌদির ঐতিহাসিক উপস্থিতি

জোসুর প্রদর্শনীতে আরবি সংস্কৃতির ঝলক, কসোভোতে সৌদির ঐতিহাসিক উপস্থিতি

প্রিস্টিনা: কসোভোর রাজধানী প্রিস্টিনার স্কান্দারবেগ স্কোয়ারে সম্প্রতি উদ্বোধন হয়েছে দশ দিনব্যাপী ষষ্ঠ জোসুর প্রদর্শনীর। কসোভোর প্রধানমন্ত্রী আলবিন কুর্তি এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন, যা সৌদি আরবের ইসলামি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বসনিয়া ও হার্জেগোভিনায় সৌদি দূতাবাসের ধর্মীয় সংযুক্তির সহযোগিতায় আয়োজিত। ‘জোসুর’, অর্থাৎ আরবি শব্দে ‘সেতু’, নামের এই প্রদর্শনী সৌদি আরব ও কসোভোর মধ্যে সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় সেতু গড়ার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে চলেছে। এটি একই সঙ্গে বালকান অঞ্চলের তৃতীয় আন্তর্জাতিক পবিত্র কুরআন মুখস্থ প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বের উদ্বোধনের সঙ্গে মিলিত হয়েছে।

জোসুর প্রদর্শনীর উদ্দেশ্য হল ইসলামের মূলনীতি প্রচার করা এবং সহানুভূতি, ন্যায়বিচার ও মধ্যপন্থার মতো মূল্যবোধ ছড়িয়ে দেওয়া। এতে কুরআনের বিরল পাণ্ডুলিপি, আরবি ক্যালিগ্রাফি, ঐতিহাসিক ছবি এবং ভার্চুয়াল রিয়েলিটি অভিজ্ঞতার মাধ্যমে সৌদি আরবের সমৃদ্ধ ইসলামি ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়েছে। কসোভোর গ্র্যান্ড মুফতি শেখ নাইম তেরনাভা বলেন, “এই সহযোগিতা আমাদের ঐতিহ্যকে শক্তিশালী করে এবং ইসলামের সর্বজনীন মূল্যবোধ তুলে ধরে।” প্রধানমন্ত্রী কুর্তি সৌদি আরবের দীর্ঘদিনের সমর্থনের কথা উল্লেখ করে বলেন, “কঠিন সময়ে সৌদি আরবের সাহায্য আমাদের মধ্যে গভীর বন্ধুত্বের প্রমাণ।” তিনি পর্যটন, শিক্ষা ও অর্থনীতির ক্ষেত্রে দুই দেশের ক্রমবর্ধমান অংশীদারিত্বেরও প্রশংসা করেন।

কসোভো, দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের একটি ক্ষুদ্র দেশ, যেখানে ইসলাম প্রধান ধর্ম এবং অ্যালবেনিয়ান সংস্কৃতি ইউরোপীয় ঐতিহ্যের সঙ্গে মিশে এক অনন্য রূপ নিয়েছে। ১৯৯৮-৯৯ সালের কসোভো যুদ্ধের সময় সৌদি আরব ২০ মিলিয়ন ডলারের আর্থিক সাহায্য, খাদ্য ও চিকিৎসা সামগ্রী দিয়ে কসোভোর পাশে দাঁড়িয়েছিল। ২০০৮ সালে কসোভো সার্বিয়া থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করলে সৌদি আরব প্রথম দেশ হিসেবে তাকে স্বীকৃতি দেয়, যা কসোভোর আন্তর্জাতিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই প্রদর্শনী দুই দেশের সম্পর্ককে আরও জোরদার করার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক বোঝাপড়া বাড়াতে সহায়ক হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *