রানি দুর্গাবতীর সমাধিকে ‘মকবরা’ বলায় বিতর্ক, জবলপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তদন্তের নির্দেশ

মধ্যপ্রদেশের জবলপুরে রানি দুর্গাবতী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ফাউন্ডেশন কোর্সের পরীক্ষায় একটি প্রশ্নকে কেন্দ্র করে তীব্র বিতর্ক ছড়িয়েছে। গত ৩ মে মহিলা ক্ষমতায়ন বিষয়ের পরীক্ষায় প্রশ্ন করা হয়েছিল, “রানি দুর্গাবতীর মকবরা কোথায় নির্মিত হয়েছে?” এই প্রশ্নে রানি দুর্গাবতীর ‘সমাধি’-কে ‘মকবরা’ বলায় ছাত্র-ছাত্রী, ইতিহাসবিদ এবং সামাজিক সংগঠনগুলো তীব্র আপত্তি জানিয়েছে। প্রশ্নটি ছাত্রদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে এবং পরবর্তীতে ছাত্র সংগঠনগুলো সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ শুরু করে।
ইতিহাসবিদরা এই প্রশ্নকে রানি দুর্গাবতীর বীরত্ব ও বলিদানের প্রতি অপমান হিসেবে অভিহিত করেছেন। তারা বলেন, “গোন্ডওয়ানার বীরাঙ্গনা রানি দুর্গাবতী মুঘলদের বিরুদ্ধে লড়াই করে বীরগতি প্রাপ্ত হয়েছিলেন। তার সমাধিকে ‘মকবরা’ বলা হিন্দু সংস্কৃতি ও তাঁর গৌরবময় ঐতিহ্যের অবমাননা।” প্রশ্নপত্রে চারটি বিকল্প দেওয়া হয়েছিল—বারেলা, বম্হানি, চারগুওয়া এবং দান্ডেই—যেখানে সঠিক উত্তর বারেলা, রানির সমাধিস্থল। তবে ‘মকবরা’ শব্দের ব্যবহার এবং বম্হানি ও চারগুওয়ার ভুল বানান বিতর্ককে আরও জটিল করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম রানি দুর্গাবতীর নামে হওয়া সত্ত্বেও এমন ভুল প্রশ্নে অনেকে এটিকে ইচ্ছাকৃত ষড়যন্ত্র বা অবহেলা বলে মনে করছেন। অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি) প্রশ্নপত্রে ‘মকবরা’ শব্দের ব্যবহারকে রানির অপমান হিসেবে উল্লেখ করে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর রশ্মি ট্যান্ডন বলেন, “‘মকবরা’ শব্দের ব্যবহার একটি গুরুতর ভুল। প্রশ্নপত্র প্রস্তুতকারী শিক্ষকের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হবে এবং উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এই ঘটনায় ছাত্র সংগঠনগুলোর পাশাপাশি স্থানীয় সামাজিক সংগঠনগুলোও তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। এনএসইউআই সতর্ক করে বলেছে, দায়ীদের শাস্তি না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেওয়া হবে। জবলপুরের বারেলায় রানি দুর্গাবতীর সমাধি একটি শ্রদ্ধার কেন্দ্র, এবং এই ভুল প্রশ্ন স্থানীয় জনগণের আবেগে আঘাত করেছে। তদন্তের ফলাফল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পদক্ষেপ এখন সবার নজরে।