নীলম উপত্যকায় নীরবতা, ব্ল্যাকআউট ঘোষণা: ভারতের আক্রমণের ভয়ে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে লকডাউনের পরিস্থিতি

পাহলগামে ২২ এপ্রিলের ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের (পিওকে) নীলম উপত্যকায় ভারতের সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় প্রশাসন রাতে বড় ধরনের হামলা এড়াতে ব্ল্যাকআউট ঘোষণা করেছে, যার ফলে উপত্যকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে। স্থানীয় মিডিয়া জানায়, “বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকলে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ কঠিন হবে, যা নীলম উপত্যকাকে ভারতের সম্ভাব্য আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে পারে।” এই ঘোষণার পর থেকে উপত্যকার রাস্তায় নীরবতা ছড়িয়ে পড়েছে, এবং স্থানীয় বাসিন্দারা বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছেন।
নীলম উপত্যকা নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) থেকে মাত্র ৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, যা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিতর্কিত কাশ্মীর অঞ্চলকে বিভক্ত করে। এই উপত্যকা পিওকের একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র, যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা আসেন। প্রায় ২ লক্ষ কাশ্মীরি বংশোদ্ভূত মানুষ এখানে বাস করেন। ভারত এই অঞ্চলের উপর দাবি জানালেও, পিওকের কারণে এটি পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পাহলগাম হামলার পর পর্যটকদ পুরোপুরি স্থবির হয়ে পড়েছে। পাকিস্তানি মিডিয়ার মতে, “মানুষ এখানে আসতে ভয় পাচ্ছে, কারণ তারা মনে করছে ভারত প্রথমে এখানেই আক্রমণ করবে।”
নীলম উপত্যকায় ভয়ের পরিবেশের মধ্যে স্থানীয় প্রশাসন সমস্ত কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করেছে। প্রশাসন জানায়, “বর্তমান পরিস্থিতিতে সবাইকে নিজ নিজ দায়িত্বে থাকতে হবে।” ব্ল্যাকআউটের সিদ্ধান্ত এই উত্তেজনারই একটি অংশ। বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারতের পদক্ষেপ, যেমন সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করা এবং আকাশসীমা বন্ধ, পাকিস্তানকে চাপে ফেলেছে। এই পরিস্থিতি পিওকে-তে সামরিক প্রস্তুতি বাড়িয়েছে, যেখানে মাদ্রাসা বন্ধ করা হয়েছে এবং স্কুলগুলো প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে রূপান্তরিত হয়েছে। নীলম উপত্যকার বাসিন্দারা এখন শান্তির অপেক্ষায়, তবে ভয়ের ছায়ায় তাদের জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে পড়েছে।