পাকিস্তানের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে ভারতের ২৪৪টি জেলায় ৭ মে, বুধবার, একটি জাতীয় মক ড্রিল অনুষ্ঠিত হবে। ২২ এপ্রিল পাহলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর কেন্দ্রীয় গৃহ মন্ত্রণালয় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ড্রিলের উদ্দেশ্য নাগরিকদের হাওয়াই হামলার মতো জরুরি পরিস্থিতিতে নিরাপদ থাকার প্রশিক্ষণ দেওয়া। মঙ্গলবার (৬ মে) গৃহ মন্ত্রণালয়ে একটি বৈঠকে এই প্রশিক্ষণের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়। “এই ড্রিল জনগণের মধ্যে সচেতনতা এবং প্রস্তুতি বাড়াবে,” বলেন এক গৃহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা।

মক ড্রিলের সময় হাওয়াই হামলার সতর্কতার জন্য সায়রেন বাজানো হবে, যা ১২০-১৪০ ডেসিবেল তীব্রতায় ২-৫ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত শোনা যাবে। নাগরিকদের শেখানো হবে কীভাবে সায়রেন শুনে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে হয়। ব্ল্যাকআউট অনুশীলনের সময় শহরের বিদ্যুৎ বন্ধ করা হবে, যাতে রাতে শত্রুপক্ষের হামলা থেকে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রক্ষা পায়। এছাড়া, সেনা ঘাঁটি, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মতো স্থানগুলি ছদ্মবেশে রাখার অনুশীলন করা হবে। নাগরিকদের জন্য প্রাথমিক চিকিৎসা প্রশিক্ষণ, টর্চ, মোমবাতি এবং ইলেকট্রনিক লেনদেন ব্যর্থ হলে ব্যবহারের জন্য নগদ প্রস্তুত রাখার উপর জোর দেওয়া হবে।

গৃহ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে, সায়রেন শোনার সময় খোলা জায়গা বা জানালার কাছে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। “বাড়ির ভিতরে থাকুন, লাইট বন্ধ করুন, দরজা-জানালা বন্ধ রাখুন এবং রেডিও বা টিভিতে সরকারি নির্দেশ শুনুন,” বলেন উত্তর প্রদেশের ডিজিপি প্রশান্ত কুমার। স্কুল, কলেজ, অফিসে প্রশিক্ষণ সেশনের মাধ্যমে নাগরিকদের শান্ত থাকতে এবং আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। জরুরি নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত নিরাপদ স্থান ছাড়বেন না।

১৯৭১ সালের পর এটি ভারতের প্রথম বড় মক ড্রিল। জম্মু-কাশ্মীর, পাঞ্জাব, রাজস্থান, গুজরাটের মতো সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিতে এই ড্রিল বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। গ্রাম পর্যায়েও এই অনুশীলন হবে, যেখানে ফায়ার সার্ভিস, হোম গার্ড এবং সিভিল ডিফেন্স সংস্থাগুলি সক্রিয়ভাবে অংশ নেবে। ড্রিলের পর প্রতিটি রাজ্যকে একটি “অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট” জমা দিতে হবে, যাতে অভিজ্ঞতা এবং উন্নতির পরামর্শ থাকবে।