আরক্ষণ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের মন্তব্য, মহারাষ্ট্রে স্থানীয় নির্বাচনের নির্দে

মহারাষ্ট্রের স্থানীয় নির্বাচনে ওবিসি আরক্ষণ নিয়ে দায়ের করা একটি মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট আরক্ষণ ব্যবস্থার তীব্র সমালোচনা করেছে। বিচারপতি সূর্যকান্ত বলেন, “আরক্ষণ এখন রেলগাড়ির ডিব্বার মতো হয়ে গেছে—যে একবার চড়ে, সে আর কাউকে ঢুকতে দেয় না।” তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, কেন শুধু কিছু সম্প্রদায় আরক্ষণের সুবিধা পাবে, যখন অনেকেই সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে পিছিয়ে রয়েছে? কোর্ট রাজ্য সরকারগুলির দায়িত্ব হিসেবে এই বিষয়ে পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে। মহারাষ্ট্রের স্থানীয় নির্বাচনের জন্য রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে চার সপ্তাহের মধ্যে বিজ্ঞপ্তি জারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কোর্ট আরও জানিয়েছে, ওবিসি সম্প্রদায়কে ২০২২ সালের কমিশনের রিপোর্টের আগে মহারাষ্ট্রে প্রচলিত আইন অনুযায়ী আরক্ষণ দেওয়া হবে। বিচারপতি সূর্যকান্ত বলেন, “জনগণের স্তরে গণতন্ত্রকে থামানো যায় না।” কোর্ট প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সময়সীমা বাড়ানোর আবেদন বিবেচনার কথাও উল্লেখ করেছে। মহারাষ্ট্রে ২,৪৮৬টি স্থানীয় সংস্থার নির্বাচন দীর্ঘদিন ধরে স্থগিত রয়েছে, এবং কোনো নির্বাচিত প্রতিনিধি না থাকায় প্রশাসনিক কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করছেন। কোর্ট এটিকে সংবিধানের বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘন হিসেবে দেখছে, যেহেতু প্রতি পাঁচ বছরে স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান বাধ্যতামূলক।
যাচিকাকারীর পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী ইন্দিরা জয় সিং বলেন, “মহারাষ্ট্রে স্থানীয় সংস্থাগুলিতে নির্বাচিত প্রতিনিধি না থাকায় গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে।” তিনি অবিলম্বে নির্বাচনের দাবি জানান। সুপ্রিম কোর্ট মহারাষ্ট্র সরকারের আইনজীবীকে তলব করে নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারির নির্দেশ দিয়েছে। এক্স-এ এই রায় নিয়ে আলোচনা চলছে, যেখানে ব্যবহারকারী রমেশ পাটিল লিখেছেন, “সুপ্রিম কোর্টের এই মন্তব্য আরক্ষণ ব্যবস্থার সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে।” বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই রায় আরক্ষণ নীতির পুনর্মূল্যায়ন এবং স্থানীয় গণতন্ত্রের শক্তিশালীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এই মামলা আরক্ষণ ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা এবং এর সুবিধাভোগীদের সংকীর্ণতার দিকে ইঙ্গিত করে। মহারাষ্ট্রে নির্বাচনের স্থগিতাবস্থা শেষ করতে কোর্টের নির্দেশ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করবে। তবে, আরক্ষণ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের মন্তব্য ভবিষ্যতে এই নীতির সংস্কার নিয়ে বৃহত্তর বিতর্কের সূচনা করতে পারে। আগামী চার সপ্তাহে মহারাষ্ট্র সরকারের পদক্ষেপ এই মামলার দিক নির্ধারণ করবে।