সংযুক্ত আরব আমিরাতের পদাঙ্কে চীনের পথে, কিন্ডারগার্টেন থেকে এআই শিক্ষার নতুন শুরু

সংযুক্ত আরব আমিরাতের পদাঙ্কে চীনের পথে, কিন্ডারগার্টেন থেকে এআই শিক্ষার নতুন শুরু

সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে সকল সরকারি স্কুলে কিন্ডারগার্টেন থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) বাধ্যতামূলক বিষয় হিসেবে পড়ানোর ঘোষণা করেছে। এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের কথা ইউএই-এর প্রধানমন্ত্রী ও দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম তার অফিসিয়াল এক্স অ্যাকাউন্টে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নতুন বিশ্ব ও উন্নত দক্ষতার জন্য প্রস্তুত করার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ। এই উদ্যোগ ইউএই-কে চীনের মতো দেশগুলোর পাশাপাশি প্রযুক্তি শিক্ষায় অগ্রগামী দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

ইউএই-এর শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি বিশেষ পাঠ্যক্রম প্রস্তুত করেছে, যা শুধু এআই-এর প্রযুক্তিগত দিক নয়, এর নৈতিক দিকগুলোও শেখাবে। কিন্ডারগার্টেনে শিশুরা গল্প ও খেলার মাধ্যমে এআই-এর প্রাথমিক ধারণা শিখবে, যেখানে উচ্চ শ্রেণিতে ডেটা, অ্যালগরিদম, অ্যাপ্লিকেশন, ঝুঁকি ও সমাজে এআই-এর প্রভাব নিয়ে পড়বে। এই পাঠ্যক্রম সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা, কৌতূহল ও সৃজনশীলতা বাড়াবে, যা ভবিষ্যতের চাকরির বাজার ও ডিজিটাল বিশ্বের জন্য শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত করবে।

এই সিদ্ধান্ত ইউএই-এর “এআই স্ট্র্যাটেজি ২০৩১”-এর অংশ, যা ২০১৭ সালে চালু হয়েছিল। এর লক্ষ্য ইউএই-কে এআই-তে বিশ্বনেতৃস্থানীয় দেশে পরিণত করা। শিক্ষার পাশাপাশি স্বাস্থ্য, পরিবহন ও অর্থনীতিতে এআই-এর ব্যবহার বাড়ানো হচ্ছে। এই উদ্যোগ অর্থনৈতিক বৈচিত্র্য আনবে, ডিজিটাল সাক্ষরতা বাড়াবে এবং টেকসই প্রযুক্তিগত উন্নয়নের পথ প্রশস্ত করবে।

ইউএই-এর এই পদক্ষেপ অন্যান্য দেশের জন্য অনুকরণীয় হতে পারে। চীনের মতো, যেখানে বেইজিং ২০২৫ থেকে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলে বছরে ৮ ঘণ্টা এআই পড়ানোর পরিকল্পনা করেছে, ইউএই-ও এআই শিক্ষাকে জাতীয় অগ্রাধিকার করেছে। বিশ্ব ডিজিটালাইজেশনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইউএই-এর এই দূরদর্শী পরিকল্পনা ভবিষ্যতের শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য একটি মডেল হয়ে উঠতে পারে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *