ভারতের সার্জিকাল স্ট্রাইকে পাকিস্তান অসহায়, কেন পাল্টা হামলা করতে পারবে না?

ভারতের সার্জিকাল স্ট্রাইকে পাকিস্তান অসহায়, কেন পাল্টা হামলা করতে পারবে না?

পহেলগামে ২২ এপ্রিলের সন্ত্রাসী হামলার ১৫ দিন পর ভারত ৬ মে মধ্যরাতে ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর অধীনে পাকিস্তান ও পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে ৯টি সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে সার্জিকাল স্ট্রাইক চালিয়েছে। এতে প্রায় ১০০ সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে পাল্টা হামলার কোনো বড় ঘোষণা না এলেও, চারটি গুরুত্বপূর্ণ কারণে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে পাল্টা হামলা করতে অক্ষম।

প্রথম কারণ: শীর্ষ নেতৃত্বের যুদ্ধবিমুখ মনোভাব
পাকিস্তানে শেহবাজ শরিফের সরকার ক্ষমতায় রয়েছে। পহেলগাম হামলার পর শেহবাজ তার বড় ভাই ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। নওয়াজ কঠোরভাবে যুদ্ধ এড়িয়ে কূটনৈতিক সমাধানের পরামর্শ দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, “যুদ্ধে গেলে পাকিস্তান ধ্বংস হয়ে যাবে।” শীর্ষ নেতৃত্বের এই অবস্থান পাকিস্তানের পাল্টা হামলার সম্ভাবনাকে কমিয়ে দেয়।

দ্বিতীয় কারণ: শুধু সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে হামলা
ভারতের স্ট্রাইকগুলি পাকিস্তানের সামরিক বা বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে নয়, শুধুমাত্র জৈশ-ই-মোহাম্মদ ও লস্কর-ই-তৈয়বার সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে সীমাবদ্ধ ছিল। এর মাধ্যমে ভারত স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে যে তার লড়াই পাকিস্তানের সরকারের সঙ্গে নয়, সন্ত্রাসীদের সঙ্গে। পাকিস্তান যদি পাল্টা হামলা করে, তবে সন্ত্রাসবাদের প্রতি তার সমর্থন বিশ্বের সামনে উন্মোচিত হবে। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ ইতিমধ্যে সন্ত্রাসীদের পৃষ্ঠপোষকতার কথা স্বীকার করেছেন।

তৃতীয় কারণ: আইএমএফ ঋণের চাপ
৯ মে আইএমএফের সঙ্গে পাকিস্তানের ঋণ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক রয়েছে। ভারতের হামলা পাকিস্তানকে কৌশলগতভাবে ফাঁদে ফেলেছে। পাল্টা হামলা করলে যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হবে, এবং আইএমএফ ঋণ দেবে না। ইতিমধ্যে চীনের কাছে বিপুল ঋণের বোঝায় জর্জরিত পাকিস্তানের অর্থনীতি দেউলিয়া হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। এক্স-এ পোস্টে বলা হয়েছে, “পাকিস্তানের অর্থনীতি এতই দুর্বল যে যুদ্ধ হলে ৭-১০ দিনের মধ্যে ভেঙে পড়বে।”

চতুর্থ কারণ: আন্তর্জাতিক সমর্থনের অভাব
অতীতে পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন পেলেও, এবার যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া কেউই তার পাশে নেই। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে ফোনে কথা বলে সন্ত্রাসী ঘাঁটি ধ্বংসের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন। চীন কিছু কূটনৈতিক সমর্থন দিলেও সামরিক সহায়তা দেয়নি। এই বিচ্ছিন্নতা পাকিস্তানকে যুদ্ধ থেকে বিরত রাখছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *