জাস্টিস যশবন্ত বর্মার বাড়িতে নগদ টাকা উদ্ধার, তদন্ত কমিটির রিপোর্টে নিশ্চিত, পদত্যাগ বা শাস্তির বিকল্প

জাস্টিস যশবন্ত বর্মার বাড়িতে নগদ টাকা উদ্ধার, তদন্ত কমিটির রিপোর্টে নিশ্চিত, পদত্যাগ বা শাস্তির বিকল্প

নয়াদিল্লি, ৭ মে: দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি যশবন্ত বর্মার (Justice Yashwant Varma) সরকারি বাসভবনে নগদ টাকা (Cash Seizure) উদ্ধারের ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টের নিযুক্ত ইন-হাউস তদন্ত কমিটি (In-House Inquiry Committee) তার রিপোর্টে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে। ১৪ মার্চ, ২০২৫-এ তুঘলক ক্রিসেন্টে বিচারপতির বাসভবনে আগুন লাগার সময় জুটের বস্তায় জ্বলন্ত নগদ টাকা পাওয়া গিয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি (CJI) সঞ্জীব খন্না (Sanjiv Khanna) গঠিত তিন সদস্যের কমিটি এই রিপোর্ট প্রধান বিচারপতির কাছে জমা দিয়েছে। বিচারপতি বর্মাকে রিপোর্টের নিষ্কাশনের উপর প্রতিক্রিয়া জানাতে দুই দিন সময় দেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, প্রাকৃতিক ন্যায়বিচারের নীতি (Natural Justice) মেনে বিচারপতি বর্মাকে তার বক্তব্য রাখার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তাকে ইলাহাবাদ হাইকোর্টের (Allahabad High Court) বিচারপতি পদ থেকে পদত্যাগের (Resignation) বিকল্প দেওয়া হয়েছে। পদত্যাগে অস্বীকৃতি জানালে মহাভিয়োগ প্রক্রিয়া (Impeachment Process) শুরু হতে পারে, যা ভারতীয় বিচারব্যবস্থায় বিরল। তদন্ত কমিটি—পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি শীল নাগু (Sheel Nagu), হিমাচল প্রদেশ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জি.এস. সন্ধাওয়ালিয়া (G.S. Sandhawalia) এবং কর্ণাটক হাইকোর্টের বিচারপতি অনু শিবরামন (Anu Sivaraman)—১৪-১৫ মার্চের ঘটনার বিস্তারিত সময়রেখা, আগুনের ঘটনা, জরুরি পরিষেবার প্রতিক্রিয়া এবং উপস্থিত ব্যক্তিদের তথ্য সংগ্রহ করেছে।

রিপোর্টে জ্বলন্ত নোটের ছবি, ভিডিও, ফরেনসিক বিশ্লেষণ (Forensic Analysis) এবং তদন্তকারী বিচারপতিদের বাসভবন পরিদর্শনের দৃশ্যমান প্রমাণ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। বিচারপতি বর্মা, তাঁর কর্মচারী, দিল্লি ফায়ার সার্ভিসের প্রধান অতুল গর্গ, পুলিশ কর্মকর্তা এবং দিল্লি হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারের বক্তব্য রেকর্ড করা হয়েছে। এক সূত্র জানান, “রিপোর্টটি সম্পূর্ণ তথ্য-নির্ভর, কোনও বাধ্যতামূলক সিদ্ধান্ত দেয়নি। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সিজেআই নেবেন।” বিচারপতি বর্মা আগামী সপ্তাহের শেষ নাগাদ প্রতিক্রিয়া জানাতে পারেন। সিজেআই খন্না, যিনি পরবর্তী সপ্তাহে অবসর নেবেন, এই বিষয়ে তাঁর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে চান।

এই ঘটনা বিচারব্যবস্থার স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার (Judicial Accountability) প্রশ্ন তুলেছে। বিচারপতি বর্মা অভিযোগ অস্বীকার করে এটিকে তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলেছেন। তবে, তদন্ত কমিটির প্রমাণ এবং সাক্ষ্য তাঁর দাবির বিরুদ্ধে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে। সুপ্রিম কোর্টের স্বচ্ছতার পদক্ষেপ, যেমন রিপোর্ট এবং ভিডিও প্রকাশ, জনগণের আস্থা ধরে রাখার প্রচেষ্টা। বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনা বিচারব্যবস্থায় সংস্কারের প্রয়োজনীয়তাকে আরও জোরালো করেছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *