মাইগ্রেন ও সায়াটিকার আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা, ডাক্তারের পরামর্শে প্রাকৃতিক সমাধান

মাইগ্রেন ও সায়াটিকার আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা, ডাক্তারের পরামর্শে প্রাকৃতিক সমাধান

পাটনা, ৭ মে: মাইগ্রেন ও সায়াটিকা এমন দুটি রোগ, যা রোগীদের জীবনকে অসহনীয় করে তোলে। মাইগ্রেনে মাথার একপাশে তীব্র, ধড়কানো ব্যথা ৪ থেকে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে, যা রোগীকে অক্ষম করে দেয়। অন্যদিকে, সায়াটিকায় নিতম্ব থেকে পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত তীব্র ব্যথা ছড়ায়, যা হাঁটা-চলা বা বসতে অসুবিধা সৃষ্টি করে। আধুনিক চিকিৎসায় পেইনকিলার ও ফিজিওথেরাপি সুপারিশ করা হলেও, ওজন বেশি হলে এর প্রভাব কম হয়। তবে, আয়ুর্বেদ এই দুই রোগের জন্য কার্যকর প্রাকৃতিক সমাধান প্রদান করে, যা ব্যথা কমিয়ে দীর্ঘমেয়াদি আরাম দেয়। আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞ ডা. অশোক রানা বলেন, “আয়ুর্বেদে রোগের মূল কারণ চিহ্নিত করে চিকিৎসা করা হয়, যা রোগ নির্মূল করতে সহায়ক।”

ডা. রানা জানান, মাইগ্রেনের চিকিৎসায় বাতজ, পিত্তজ ও কফজ ভারসাম্যের উপর ভিত্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়। সায়াটিকার জন্য অজোয়ান, হরশিঙ্গার, কেশর, সৈন্ধব লবণ, হলুদ এবং মেথি অত্যন্ত কার্যকর। তিনি বলেন, “গরম জলে সৈন্ধব লবণ মিশিয়ে সেঁক দিলে ব্যথা উপশম হয়। অজোয়ান ও হলুদের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণ ব্যথা ও ফোলাভাব কমায়।” হরশিঙ্গার কেশরের সঙ্গে এবং মেথি সকালে খালি পেটে গ্রহণ করলে উপকার পাওয়া যায়। আয়ুর্বেদে বিশ্বাস করা হয়, শরীরে বাত, পিত্ত ও কফের ভারসাম্যহীনতাই রোগের কারণ। এই তিন উপাদান নিয়ন্ত্রণ করলে রোগ ধীরে ধীরে দূর হয়। তবে, এই চিকিৎসা অভিজ্ঞ আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে করা উচিত।

যারা দীর্ঘদিন ধরে মাইগ্রেন বা সায়াটিকার ব্যথায় ভুগছেন এবং আধুনিক চিকিৎসায় সুরাহা পাননি, তাঁরা আয়ুর্বেদিক পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন। ডা. রানা সতর্ক করে বলেন, “চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া আয়ুর্বেদিক নুসখা গ্রহণ করলে পুরো উপকার পাওয়া যায় না।” আয়ুর্বেদের এই প্রাকৃতিক চিকিৎসা কেবল ব্যথা উপশমই নয়, রোগের মূল কারণ দূর করে জীবনযাত্রার মান উন্নত করে। তবে, বিশ্লেষকরা মনে করেন, আয়ুর্বেদের পাশাপাশি জীবনযাত্রায় পরিবর্তন, যেমন সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও ব্যায়াম, এই রোগ নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত সুবিধা দেয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *