পাকিস্তান কি এলন মাস্ককে ধোঁকা দিল? স্টারলিঙ্কের সাময়িক লাইসেন্স বিতর্কে নতুন মোড়

পাকিস্তান কি এলন মাস্ককে ধোঁকা দিল? স্টারলিঙ্কের সাময়িক লাইসেন্স বিতর্কে নতুন মোড়

ইসলামাবাদ, ৭ মে: বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি এলন মাস্কের স্পেসএক্সের প্রকল্প স্টারলিঙ্ক পাকিস্তানে বড় ধাক্কা খেয়েছে। দূরবর্তী অঞ্চলে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে উচ্চগতির ইন্টারনেট সরবরাহের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করা এই কো ম্পা নি ২০২৫ সালের মার্চে পাকিস্তানে সাময়িক লাইসেন্স পেয়েছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক রিপোর্টে জানা গেছে, পাকিস্তান সরকার এখন স্থায়ী লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে নতুন শর্ত আরোপ করেছে, যাকে অনেকে ‘ধোঁকা’ হিসেবে দেখছেন। পাকিস্তান টেলিকমিউনিকেশন অথরিটি (পিটিএ) জানিয়েছে, স্টারলিঙ্ককে স্থায়ী নিবন্ধন এবং নতুন প্রযুক্তিগত ও নিরাপত্তা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। এই শর্ত পূরণ না হলে স্টারলিঙ্ক পরিষেবা শুরু করতে পারবে না।

পাকিস্তানের এই ইউ-টার্ন নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। মার্চে সাময়িক লাইসেন্স দেওয়ার সময় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী শাজা ফাতিমা খাজা বলেছিলেন, “স্টারলিঙ্কের আগমন পাকিস্তানে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট পরিষেবার আনুষ্ঠানিক সূচনা করবে।” কিন্তু এখন নতুন শর্ত আরোপের ফলে ধারণা করা হচ্ছে, পাকিস্তান প্রাথমিকভাবে প্রযুক্তিগত অগ্রগতির প্রচার করলেও এটি একটি রাজনৈতিক কৌশল হতে পারে। বিশ্লেষক আলিয়া খান বলেন, “পাকিস্তান প্রায়ই বিদেশি কো ম্পা নিগুলোকে আকর্ষণ করে, কিন্তু পরে জটিল নিয়ম আরোপ করে তাদের পক্ষে কাজ করা কঠিন করে দেয়।” এই পদক্ষেপকে ভারতের মতো প্রতিবেশী দেশগুলোর উপর প্রভাব ফেলার চেষ্টা হিসেবেও দেখা হচ্ছে।

এর আগেও পাকিস্তান এলন মাস্কের সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়েছে। সাধারণ নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগের পর মাস্কের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স পাকিস্তানে নিষিদ্ধ করা হয়। অথচ, সরকারি কর্মকর্তারা ভিপিএন ব্যবহার করে এক্স-এর হ্যান্ডেল পরিচালনা করেন, যার জন্য গত মাসে পাকিস্তান হাইকোর্ট সরকারকে তিরস্কার করেছিল। এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হিসেবে স্টারলিঙ্কের স্থায়ী লাইসেন্স বিলম্বিত করার পদক্ষেপকে অনেকে ধোঁকা হিসেবে দেখছেন।

পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে স্টারলিঙ্কের মতো উন্নত প্রযুক্তি সেবা দেশের দূরবর্তী অঞ্চলে ইন্টারনেট সংযোগ উন্নত করতে পারত। কিন্তু নতুন শর্তের ফলে স্টারলিঙ্ককে আবার আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করতে হতে পারে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, এটি পাকিস্তানের বিদেশি বিনিয়োগকারীদের প্রতি অস্পষ্ট নীতির আরেকটি উদাহরণ। এই পরিস্থিতি পাকিস্তানের ডিজিটাল অবকাঠামো উন্নয়নের সম্ভাবনাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *