অপারেশন সিঁদুরের পর উত্তেজনা: আমরনাথ যাত্রার উপর প্রভাব, কেমন চলছে প্রস্তুতি?

শ্রীনগর, ৭ মে: জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ২২ এপ্রিলের জঙ্গি হামলার প্রতিশোধ হিসেবে ভারতীয় সেনাবাহিনী ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর মাধ্যমে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করেছে। এই হামলায় প্রায় ১০০ জঙ্গি নিহত হয়েছে। এই ঘটনার পর অঞ্চলে উত্তেজনা বিরাজ করছে, যা আসন্ন আমরনাথ যাত্রার উপর ছায়া ফেলেছে। তবে, শ্রী আমরনাথজি শ্রাইন বোর্ড (এসএএসবি) জানিয়েছে, যাত্রা নির্ধারিত সময়ে, অর্থাৎ ৩ জুলাই থেকে শুরু হবে এবং ৯ আগস্ট পর্যন্ত চলবে।
অপারেশন সিঁদুরের পর নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে। শ্রাইন বোর্ডের মুখপাত্র জানিয়েছেন, “হিমশিবলিঙ্গের নিরাপত্তার জন্য গুহার প্রবেশপথে লোহার গ্রিল স্থাপন করা হয়েছে। শীঘ্রই একটি দল গুহায় পৌঁছে শিবলিঙ্গের সংরক্ষণ নিশ্চিত করবে এবং কেউ যাতে এর সঙ্গে ছেদছাড় না করে, তা দেখবে।” এই দলকে দুই মাস ধরে অতিরিক্ত ভিড় সামলাতে হবে, কারণ অনেক ভক্ত যাত্রা শুরুর আগেই গুহায় পৌঁছে যান। গত কয়েক বছরে দেখা গেছে, শিবলিঙ্গ প্রায়ই যাত্রা শুরুর আগে গলে যায়। এবার শিবলিঙ্গের প্রথম ছবি প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে এটি ৮-১০ ফুট উচ্চতার সঙ্গে চওড়া আকার নিয়েছে, যা ভক্তদের মধ্যে উৎসাহ সৃষ্টি করেছে।
নিরাপত্তার দিক থেকে, পহেলগাঁও হামলার পর থেকেই প্রশাসন সতর্ক। উপরাজ্যপাল মনোজ সিনহা, যিনি শ্রাইন বোর্ডের চেয়ারম্যান, শ্রীনগরের পন্থা চক ট্রানজিট ক্যাম্প পরিদর্শন করে নিরাপত্তা, চিকিৎসা ও থাকার ব্যবস্থা পর্যালোচনা করেছেন। জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ, সিআরপিএফ, ভারতীয় সেনা ও আইটিবিপি-র সমন্বয়ে বহুস্তরীয় নিরাপত্তা পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। প্রায় ৭০,০০০ অর্ধসামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে, সঙ্গে রয়েছে এনডিআরএফ, এসডিআরএফ ও বিএসএফ-এর বিশেষ দল। বালটাল ও পহেলগাঁও রুটে উচ্চ নিরাপত্তা পয়েন্টে ৩৮টি বিশেষ প্রশিক্ষিত উদ্ধার দল মোতায়েন থাকবে। স্থানীয় পরিষেবা প্রদানকারী ও ঘোড়ার মালিকদের বেস ক্যাম্পে পরিচয়পত্র যাচাইয়ের মাধ্যমে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
যাত্রার জন্য নিবন্ধন ১ মার্চ থেকে শুরু হয়েছে। ভক্তদের ১৩-৭০ বছর বয়সের মধ্যে হতে হবে এবং চিকিৎসা শংসাপত্র জমা দিতে হবে। উপরাজ্যপাল সিনহা বলেন, “আমরা যাত্রীদের নিরাপত্তা ও সুবিধা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।” তবে, বিশ্লেষকরা মনে করেন, পাকিস্তানের পাল্টা প্রতিক্রিয়া এবং সীমান্তে গোলাগুলির ঘটনা যাত্রার সময় নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে। স্থানীয়রা আশা করছেন, কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে যাত্রা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হবে।