অপারেশন সিঁদুর ২.০: পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের কঠোর বার্তা, এখনও বাকি আছে বড় পদক্ষেপ

নয়াদিল্লি, ৭ মে: পহেলগাঁওয়ে ২২ এপ্রিলের ভয়াবহ জঙ্গি হামলার প্রতিশোধ হিসেবে ভারতীয় সেনাবাহিনী ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর অধীনে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে (পিওকে) ৯টি জঙ্গি ঘাঁটিতে নির্ভুল হামলা চালিয়ে প্রায় ১০০ জঙ্গিকে নিশ্চিহ্ন করেছে। এই হামলায় লস্কর-ই-তৈয়বা, জৈশ-ই-মহম্মদ এবং হিজবুল মুজাহিদিনের ঘাঁটি ধ্বংস হয়েছে। ভারতীয় সেনা জানিয়েছে, “অপারেশন সিঁদুর এখনও শেষ হয়নি।” এই বার্তায় স্পষ্ট, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের কঠোর অবস্থান এখনও অব্যাহত। এই হামলায় পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে, এবং প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এটিকে “যুদ্ধের কাজ” বলে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
অপারেশন সিঁদুরকে ভারতের আক্রমণাত্মক সামরিক নীতির প্রতিফলন হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ মেজর জেনারেল (অব.) রজত শর্মা বলেন, “উড়ি, পুলওয়ামা এবং বালাকোটের পর এই অপারেশন ভারতের ‘প্রতিরক্ষা থেকে আক্রমণ’-এর দিকে ঝোঁক দেখায়। পাকিস্তানকে বোঝাতে হবে, তার মাটি থেকে জঙ্গিবাদ আর চলবে না।” পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের নীরবতা এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বের উপর চাপ এই হামলার তীব্রতার ইঙ্গিত দেয়। পাকিস্তানের পাল্টা গোলাগুলি সত্ত্বেও ভারত জানিয়েছে, কোনো বেসামরিক বা সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করা হয়নি।
অপারেশন সিঁদুর ২.০-এর পরবর্তী ধাপ নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। সামরিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, ভারত এবার বেলুচিস্তানের অসন্তোষকে কাজে লাগিয়ে পাকিস্তানকে কূটনৈতিক ও সামরিকভাবে বিচ্ছিন্ন করতে পারে। বেলুচিস্তানে স্থানীয় জনগণ ও পুলিশের সরকারবিরোধী মনোভাব ভারতের জন্য কৌশলগত সুযোগ তৈরি করেছে। “১৯৭১-এর যুদ্ধের মতো ভারত বেলুচিস্তানকে পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন করার পরিকল্পনা করতে পারে। এটি চীন ও তুরস্কের মতো পাকিস্তান-সমর্থক দেশগুলোর কাছেও শক্তিশালী বার্তা দেবে,” বলেন কৌশলবিদ অজয় সিং। ভারত ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও সৌদি আরবের মতো দেশগুলোকে এই অপারেশন সম্পর্কে জানিয়েছে, যা তার কূটনৈতিক প্রস্তুতির ইঙ্গিত দেয়।
এই অপারেশনের মাধ্যমে ভারত বিশ্বকে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে: সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তার শূন্য সহনশীলতা এবং আক্রমণাত্মক প্রতিক্রিয়ার সক্ষমতা। পাকিস্তানের জন্য এটি একটি কঠিন পরীক্ষার সময়, এবং অপারেশন সিঁদুর ২.০-এর পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, তা নিয়ে গোটা বিশ্বের নজর এখন ভারতের দিকে।