লাহোর ও করাচিতে ধমাকার ঢেউ, অপারেশন সিন্দুরের পর পাকিস্তানে আতঙ্ক

লাহোর ও করাচিতে ধমাকার ঢেউ, অপারেশন সিন্দুরের পর পাকিস্তানে আতঙ্ক

মঙ্গলবার মধ্যরাতে পাকিস্তানের লাহোর শহরে টানা তিনটি শক্তিশালী ধমাকার শব্দে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ওয়ালটন বিমানবন্দরের কাছে গোপাল নগর এবং নাসিরাবাদ এলাকায় এই ধমাকাগুলি ঘটে, যা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর একটি ইউনিটের খুব কাছাকাছি বলে জানা গেছে। ধমাকার শব্দ কয়েক কিলোমিটার দূর পর্যন্ত শোনা যায়, এবং ঘটনার পর শহরে সাইরেনের শব্দে উত্তেজনা আরও বাড়ে। স্থানীয় সূত্র জানায়, আকাশে কালো ধোঁয়ার বিশাল মেঘ দেখা গেছে, এবং কেউ কেউ এটিকে ড্রোন হামলার মতো বলে দাবি করেছেন। লাহোরের আল্লামা ইকবাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর অস্থায়ীভাবে বন্ধ করা হয়েছে, এবং এলাকাটি ঘিরে পুলিশ ও সামরিক সংস্থাগুলো তদন্ত শুরু করেছে।

এই ধমাকাগুলি এমন সময়ে ঘটেছে যখন ভারতের ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর মাধ্যমে পাকিস্তান ও পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে (পিওকে) ৯টি সন্ত্রাসী ঘাঁটি ধ্বংস করার খবর এখনও আলোচনায়। ৬-৭ মে মধ্যরাতে পরিচালিত এই অভিযানে ভারত ৭০ জনেরও বেশি সন্ত্রাসীকে নিশ্চিহ্ন করেছে বলে দাবি করেছে, যার মধ্যে কোনো পাকিস্তানি সামরিক ঘাঁটি বা বেসামরিক ক্ষতি হয়নি। এই ঘটনার একদিন পর লাহোরে ধমাকা ঘিরে নানা জল্পনা শুরু হয়েছে। করাচি বিমানবন্দরের কাছেও ধমাকার খবর পাওয়া গেছে, যদিও ফ্লাইট অপারেশন বন্ধের কোনো আনুষ্ঠানিক নিশ্চিতকরণ নেই। নিরাপত্তার কারণে উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ভারতের এয়ারস্ট্রাইকের জবাবে কঠোর প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন, “পাকিস্তানের নিরাপত্তার অধিকার আছে, এবং আমরা ভারতের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব।” তবে, লাহোরের ধমাকার পিছনে কার হাত রয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। কেউ কেউ এটিকে অপারেশন সিন্দুরের প্রতিক্রিয়া বলে মনে করছেন, আবার কেউ অভ্যন্তরীণ অশান্তির সম্ভাবনার কথা বলছেন। পাকিস্তানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এখন তীব্র চাপের মুখে, এবং এই ঘটনা দেশটির অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক সংকটকে আরও গভীর করতে পারে।

ধমাকার পর লাহোরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে, এবং স্থানীয়রা নিরাপত্তার জন্য রাস্তায় নেমে এসেছেন। পাকিস্তান সরকার লাহোর ও ইসলামাবাদের বিমানবন্দরে বাণিজ্যিক ফ্লাইট বন্ধ করেছে, যা পরিস্থিতির গুরুত্ব নির্দেশ করে। তদন্ত চলছে, এবং আগামী কয়েক ঘণ্টায় আরও তথ্য প্রকাশের সম্ভাবনা রয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *