শহীদ দিনেশ শর্মার গ্রামে শোকের ছায়া, অপারেশন সিন্দুরে বীরত্বের অমর গাথা

হরিয়ানার পলওয়াল জেলার মোহাম্মদপুর গ্রামের বীরপুত্র ল্যান্স নায়েক দিনেশ শর্মা ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর সময় পাকিস্তানের সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে ভারতীয় সেনার এয়ারস্ট্রাইকের মধ্যে দেশের জন্য শহীদ হয়েছেন। বুধবার (৭ মে, ২০২৫) সকালে তাঁর শহাদতের খবর গ্রামে পৌঁছাতেই শোকের ছায়া নেমে আসে। গ্রামবাসীরা দিনেশের পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে ভিড় জমায়। দিনেশের বাবা দয়াচাঁদ শর্মা কান্নাভেজা কণ্ঠে বলেন, “আমার পাঁচ ছেলের মধ্যে দিনেশ সবচেয়ে বড়। তিন ছেলে এখনও সেনায় আছে।” তাঁর কথায় বোঝা যায়, পরিবারের দেশসেবার গর্বের পাশাপাশি শোকের গভীরতা।
পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিশোধ হিসেবে ভারতীয় সেনা পাকিস্তান ও পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে (পিওকে) নয়টি সন্ত্রাসী ঘাঁটি ধ্বংস করে। এই অভিযানে দিনেশ, যিনি সেনার ৫ মিডিয়াম আর্টিলারি ডিভিশনে কর্মরত ছিলেন, পাকিস্তানি গোলাবর্ষণে গুরুতর আহত হন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। দিনেশের চাচাতো ভাই মুকেশ, যিনি সেনার মেডিকেল উইংয়ে কর্মরত, শহাদতের খবর পেয়ে গ্রামে ছুটে আসেন। তিনি বলেন, “দিনেশ ছিল আমাদের গর্ব। তাঁর বীরত্ব আমাদের প্রেরণা।” দিনেশের দুই ভাইও সেনায় কর্মরত, যা পরিবারের দেশভক্তির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
দিনেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধু প্রদীপ জানান, অভিযানের আগে মঙ্গলবার রাত ১০:৩০-এ দিনেশের সঙ্গে তাঁর শেষ কথা হয়। “দিনেশ বলেছিল, অপারেশনের জন্য যাচ্ছি। ফোনের আলোতে সমস্যা হতে পারে, পরে কথা হবে,” বলে প্রদীপ আবেগতাড়িত হন। রাত ৩টায় দিনেশের আরেকটি কল এলেও প্রদীপ তা ধরতে পারেননি। সকাল ৭টায় ফোন করলে দিনেশের সঙ্গী জানান, একটি ধমাকায় তিনি গুরুতর আহত। শীঘ্রই তাঁর শহাদতের খবর আসে। বৃহস্পতিবার দিনেশের দেহ গ্রামে আনা হবে, যেখানে রাষ্ট্রীয় সম্মানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
দিনেশের শহাদত গ্রামবাসীদের মনে গভীর ক্ষত তৈরি করেছে। তাঁর গর্ভবতী স্ত্রী সীমা ও দুই সন্তানের জন্য সবাই প্রার্থনা করছেন। অপারেশন সিন্দুরে তাঁর বীরত্ব দেশের জন্য অমর হয়ে থাকবে, তবে পরিবারের শূন্যতা অপূরণীয়।