এশিয়ান ধানের প্রথম ‘প্যানজিনোম’ তৈরি, জলবায়ু ও রোগ প্রতিরোধে নতুন সম্ভাবনা

এশিয়ান ধানের প্রথম ‘প্যানজিনোম’ তৈরি, জলবায়ু ও রোগ প্রতিরোধে নতুন সম্ভাবনা

নয়া দিল্লি: বিশ্বের অন্যতম প্রধান খাদ্যশস্য এশিয়ান ধানের (ওরাইজা স্যাটিভা এল.) জন্য প্রথমবারের মতো ‘প্যানজিনোম’ তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা। এশিয়ার ১৪৪টি বুনো ও চাষকৃত ধানের জাতের জিনোমের মূল অংশ একত্রিত করে এই রেফারেন্স জিনোম প্রস্তুত করা হয়েছে। ২০০৩ সালের হিউম্যান জিনোম প্রকল্পের মতো এই প্যানজিনোম ধানের জেনেটিক বৈচিত্র্য প্রকাশ করে, যা নতুন জাত উন্নয়ন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ধাক্কা সহ্য করার ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করবে। “এই প্যানজিনোম ধানের ভবিষ্যৎ গবেষণার দ্বার উন্মোচন করেছে,” বলেন প্রকল্পের প্রধান গবেষক ড. রাজীব চৌধুরী।
বিশ্বের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মানুষের প্রধান খাদ্য ধান। ভারতে জুন-সেপ্টেম্বরের মৌসুমে এটি প্রধান ফসল। ২০২৪-২৫ সালে ভারত ৫১,০০০ হেক্টর জমিতে রেকর্ড ২২০ মিলিয়ন টন ধান উৎপাদন করেছে, গড় ফলন হেক্টরপ্রতি ৪.২ টন। তবে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা ফলন কমানোর পাশাপাশি ধানে আর্সেনিক শোষণ বাড়াচ্ছে। ১৯০১ সাল থেকে ভারতের গড় তাপমাত্রা ০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে। ২০২৪ ছিল রেকর্ড গরম বছর, গড় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা দীর্ঘমেয়াদী গড়ের তুলনায় ০.৯ ডিগ্রি বেশি। এই প্যানজিনোম এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নতুন সম্ভাবনা তৈরি করবে।
এই গবেষণা কৃষকদের জন্য আশার আলো। প্যানজিনোমের মাধ্যমে এমন ধানের জাত তৈরি সম্ভব, যা উচ্চ তাপমাত্রা, খরা এবং রোগ সহ্য করতে পারবে। “এই অগ্রগতি ভারতের খাদ্য নিরাপত্তা জোরদার করবে,” বলেন কৃষি বিশেষজ্ঞ ড. মীনাক্ষী রাও। তবে, এই প্রযুক্তির ব্যাপক প্রয়োগে সময় ও বিনিয়োগ প্রয়োজন। এই প্যানজিনোম ধান উৎপাদনের টেকসই ভবিষ্যৎ গড়তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *