নয়া দিল্লি: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি দ্রুত গতিতে প্রতিটি শিল্পে বিপ্লব ঘটাচ্ছে। স্মার্টফোন নির্মাতারা গ্রাহকদের উন্নত অভিজ্ঞতার জন্য এআই ফিচার যুক্ত করছে, কিন্তু এখন এমন এক সময়ের কথা উঠছে যখন স্মার্টফোনের প্রয়োজনই আর থাকবে না। অ্যাপলের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট (সার্ভিসেস) এডি কিউ সম্প্রতি গুগল বনাম মার্কিন বিচার বিভাগের অ্যান্টিট্রাস্ট মামলায় সাক্ষ্য দেওয়ার সময় স্মার্টফোনের ভবিষ্যৎ নিয়ে চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করেছেন। “১০ বছর পর আইফোনের প্রয়োজন নাও হতে পারে, যতই পাগলামি মনে হোক,” বলেন কিউ। তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, এআই প্রযুক্তি ঐতিহ্যবাহী স্মার্টফোনকে প্রতিস্থাপন করতে পারে।

কিউর মতে, এআই-এর দ্রুত অগ্রগতি প্রযুক্তির জগতে বড় পরিবর্তন আনছে। “প্রযুক্তির পরিবর্তনই প্রকৃত প্রতিযোগিতা তৈরি করে। এআই একটি নতুন প্রযুক্তিগত বিপ্লব, যা নতুন সম্ভাবনা খুলছে,” তিনি যোগ করেন। অ্যাপলের প্রধান পণ্য আইফোন বর্তমানে কো ম্পা নির রাজস্বের প্রধান উৎস, তবে এই মন্তব্য ইঙ্গিত দেয় যে অ্যাপল ভবিষ্যতের জন্য ভিন্ন পথে হাঁটতে প্রস্তুত। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, আইফোন বন্ধ হলে অ্যাপল কী নিয়ে আসবে? মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, অ্যাপল রোবোটিক্স এবং পরিধানযোগ্য প্রযুক্তি, বিশেষ করে অগমেন্টেড রিয়েলিটি (এআর) স্মার্ট গ্লাসের উপর জোর দিচ্ছে, যা আইফোনের বিকল্প হতে পারে।

অ্যাপলের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় রয়েছে ফোল্ডেবল আইফোন এবং ক্যামেরা বা ফেস আইডি কাটআউট ছাড়া অল-ডিসপ্লে স্মার্টফোন, যা ২০২৬ এবং ২০২৭ সালে লঞ্চ হতে পারে। তবে, এআই-চালিত পরিধানযোগ্য ডিভাইসই হতে পারে অ্যাপলের পরবর্তী বড় লক্ষ্য। “আইফোনের মতো বহুমুখী পণ্য প্রতিস্থাপন করা কঠিন, তবে এআই-এর সম্ভাবনা অসীম,” বলেন প্রযুক্তি বিশ্লেষক রাজীব শর্মা। অ্যাপলের ব্যর্থ ইলেকট্রিক কার প্রোজেক্ট এবং ভিআর হেডসেটের মন্দা বিক্রির পর এআই-কেন্দ্রিক উদ্ভাবনই কো ম্পা নির ভবিষ্যৎ হতে পারে।

কিউর এই মন্তব্য শুধু অ্যাপলের কৌশলগত পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয় না, বরং প্রযুক্তির দ্রুত পরিবর্তনশীল জগতের ছবিও তুলে ধরে। আইফোনের মতো আইকনিক পণ্যের ভবিষ্যৎ নিয়ে এই জল্পনা ভোক্তা ও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন কৌতূহল জাগিয়েছে। অ্যাপল কীভাবে এআই-এর এই নতুন যুগে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবে, তা দেখার অপেক্ষা।