ভারতের এই সাংসদ পাইলটও বটে, রাজীব প্রতাপ রুডির শিক্ষা ও উড়ানের গল্প

পটনা: ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে চলমান উত্তেজনার মধ্যে ভারতীয় বায়ুসেনা সর্বদা সতর্ক। এই সময়ে দেশের একজন সাংসদের পাইলট হিসেবে প্রশিক্ষণ ও সুখোই-৩০ এমকেআই উড়িয়ে আকাশে করতব দেখানোর গল্প আলোচনায় এসেছে। তিনি হলেন বিহারের সারণের লোকসভা সাংসদ রাজীব প্রতাপ রুডি। ২০২৫-এর এয়ারো ইন্ডিয়ায় বেঙ্গালুরুতে তিনি ২২,০০০ ফুট উচ্চতায় এই যুদ্ধবিমান উড়িয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। “রুডির এই কৃতিত্ব দেশের জন্য গর্বের,” বলেন প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক অজয় সিং।
৩০ মার্চ, ১৯৬২-তে বিহারের সারণ জেলার এক রাজপুত জমিদার পরিবারে জন্ম নেওয়া রুডির শিক্ষাগত যাত্রা সমান জ্বলজ্বলে। তিনি পটনার সেন্ট মাইকেল হাই স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে চণ্ডীগড়ের ডিএভি কলেজে প্রি-ইউনিভার্সিটি ও প্রি-ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পন্ন করেন। এরপর চণ্ডীগড়ের সরকারি কলেজ থেকে অর্থনীতিতে বিএ (অনার্স) এবং ১৯৮৫ সালে পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনের ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮৭ সালে মগধ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর করেন। রাজনীতিতে প্রবেশের আগে তিনি পটনার এএন কলেজে প্রভাষক ছিলেন। “শিক্ষা ও পেশাগত দক্ষতার এমন সমন্বয় বিরল,” বলেন শিক্ষাবিদ রিনা মিশ্রা।
রুডির পাইলট প্রশিক্ষণ তাঁকে আরও অনন্য করে তুলেছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার মিয়ামিতে সিমসেন্টার থেকে এ-৩২০ বিমান চালানোর জন্য বাণিজ্যিক পাইলট লাইসেন্স (সিপিএল) অর্জন করেছেন, যা মার্কিন ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) দ্বারা স্বীকৃত। তিনি প্রায়ই পটনা থেকে দিল্লি নিজে বিমান চালিয়ে আসেন। ১৯৯০ সালে মাত্র ২৬ বছর বয়সে বিধায়ক নির্বাচিত হয়ে তিনি বিহারের অন্যতম তরুণ রাজনীতিবিদ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। পরে তিনি নাগরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
রুডির এই বহুমুখী প্রতিভা তাঁকে রাজনীতি ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে এক অনন্য ব্যক্তিত্ব করে তুলেছে। বর্তমান ভারত-পাক উত্তেজনার মধ্যে তাঁর পাইলট প্রশিক্ষণ ও সুখোই উড়ানোর কৃতিত্ব জাতীয় গর্বের প্রতীক হয়ে উঠেছে। তাঁর শিক্ষা, পেশাদারিত্ব ও দেশপ্রেম তরুণদের জন্য অনুপ্রেরণা।