ভারতের রপ্তানি আধিপত্য: মশলা থেকে রত্ন, বিশ্ব বাজারে শীর্ষে

কলকাতা: সভ্যতার সূচনা থেকেই আমদানি-রপ্তানির মাধ্যমে বাণিজ্যে নেতৃত্ব দিয়েছে ভারত। মশলা, রত্ন, দুগ্ধজাত পণ্য, পেট্রোপণ্য থেকে হস্তশিল্প—এমন বৈচিত্র্যপূর্ণ পণ্য রপ্তানিতে ভারত বিশ্বে শীর্ষে। এই পণ্যগুলো অন্যান্য দেশে দুষ্প্রাপ্য, যা ভারতের রপ্তানি তালিকায় অনন্য স্থান দিয়েছে। “ভারতের রপ্তানি বৈচিত্র্য বিশ্ব বাণিজ্যে আমাদের শক্তি প্রমাণ করে,” বলেন অর্থনীতিবিদ ড. রাজীব মেহতা।
মশলা ভারতের রপ্তানির মুকুটে রত্ন। কেরালার কালো মরিচ, তামিলনাড়ুর হলুদ বা কাশ্মীরের কেশর—বিভিন্ন রাজ্যের সংস্কৃতি ও রান্নায় মশলার অপরিহার্য ভূমিকা রয়েছে। বিশ্বের রন্ধনশালায় ভারতীয় মশলার চাহিদা অতুলনীয়। এছাড়া, মূল্যবান পাথর, জহরত ও রত্ন ভারতের ঐতিহাসিক সম্পদ। রাজস্থান ও গুজরাটের খনি থেকে উৎপন্ন এই রত্ন বিশ্ব বাজারে শীর্ষে। দুগ্ধজাত পণ্যে ভারতের আধিপত্যও অপ্রতিদ্বন্দ্বী। “দুধের প্রাচুর্য ভারতকে মিষ্টি ও দুগ্ধজাত পণ্য রপ্তানিতে অগ্রগণ্য করেছে,” বলেন কৃষি বিশেষজ্ঞ ড. সুজিতা রায়। আমেরিকা ও ইউরোপে ভারতীয় দুধ ও মিষ্টির চাহিদা ক্রমবর্ধমান।
পেট্রোপণ্য, যেমন কয়লা ও মোম, বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের মতো প্রতিবেশী দেশে ব্যাপক রপ্তানি হয়। হোমিওপ্যাথি ঔষধে ভারতের অবদানও উল্লেখযোগ্য, বিশেষ করে পশ্চিমা দেশে এর মুনাফা অত্যন্ত লাভজনক। মাংস, বিশেষ করে মহিষ ও সামুদ্রিক মাছ, বিশ্বব্যাপী চাহিদা মেটায়। ঐতিহ্যবতী হস্তশিল্প, যেমন হাতে বোনা কাপড় ও মৃৎশিল্প, স্বল্প বিনিয়োগে বিশাল রপ্তানি সম্ভাবনা তৈরি করেছে। টেক্সটাইল শিল্পে ভারত আমেরিকা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে পাট ও তুলার পণ্য রপ্তানিতে শীর্ষে। “হস্তশিল্প ও টেক্সটাইল ভারতের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতিফলন,” বলেন শিল্প বিশ্লেষক অমিত শর্মা।
এছাড়া, ভোটের কালি, নিম, জৈব রাসায়নিক, ফার্মাসিউটিক্যালস ও লোহা-ইস্পাতের মতো পণ্য ভারতের রপ্তানি তালিকায় গুরুত্বপূর্ণ। এই বৈচিত্র্যপূর্ণ রপ্তানি ভারতের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করছে এবং বিশ্ব বাজারে দেশের মর্যাদা বাড়াচ্ছে।