ভারতের ফরেক্স রিজার্ভে ৮ সপ্তাহ পর হ্রাস, ১৭ হাজার কোটির পতন

ভারতের বৈদেশিক মুদ্রা ভাণ্ডার (ফরেক্স রিজার্ভ) আট সপ্তাহের ঊর্ধ্বগতির পর কমেছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (আরবিআই) জানিয়েছে, ২ মে ২০২৫-এ সমাপ্ত সপ্তাহে ফরেক্স রিজার্ভ ২.০৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কমে ৬৮৬.০৬৪ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকার সমতুল্য। এর আগে, ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত আট সপ্তাহে রিজার্ভ ৪৯.৪৩ বিলিয়ন ডলার বেড়েছিল, সর্বোচ্চ ৭০৪.৮৮৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছে (সেপ্টেম্বর ২০২৪)। “রুপির মূল্য অবমূল্যায়ন রোধে আরবিআই বাজারে হস্তক্ষেপ করেছে, যা রিজার্ভ হ্রাসের একটি কারণ হতে পারে,” বলেন অর্থনীতিবিদ ড. সৌম্যা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফরেক্স রিজার্ভে হ্রাস সত্ত্বেও ভারতের অর্থনীতি স্থিতিশীল, কারণ এটি এক বছরের আমদানি ব্যয় মেটানোর জন্য যথেষ্ট।
আরবিআই’র তথ্য অনুযায়ী, ফরেন কারেন্সি অ্যাসেটস (এফসিএ) ৫১৪ মিলিয়ন ডলার বেড়ে ৫৮১.১৭৭ বিলিয়ন ডলার হলেও, স্বর্ণ ভাণ্ডার ২.৫৪৫ বিলিয়ন ডলার কমে ৮১.৮২ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। বিশেষ আহরণ অধিকার (এসডিআর) ৩০ মিলিয়ন ডলার কমে ১৮.৫৫৮ বিলিয়ন এবং আইএমএফ-এ ভারতের রিজার্ভ ৩ মিলিয়ন ডলার কমে ৪.৫০৯ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। এদিকে, পাকিস্তানের ফরেক্স রিজার্ভে ১১৮ মিলিয়ন ডলার বৃদ্ধি পেয়েছে। স্টেট ব্যাঙ্ক অফ পাকিস্তান (এসবিপি) জানিয়েছে, ২ মে ২০২৫-এ তাদের রিজার্ভ ১০.৩৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, এবং মোট তরল রিজার্ভ (বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কসহ) ১৫.৪৮ বিলিয়ন ডলার। “আন্তর্জাতিক ঋণ পরিশোধের চাপ কমায় পাকিস্তানের রিজার্ভ বাড়ছে,” বলেন ফিনান্সিয়াল অ্যানালিস্ট ফারহান আহমেদ।
এই বিপরীতমুখী প্রবণতা ভারত-পাকিস্তানের অর্থনৈতিক গতিশীলতার পার্থক্য তুলে ধরে। ভারতের বিশাল রিজার্ভ অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রতীক হলেও, সাম্প্রতিক হ্রাস বৈশ্বিক বাজারের অস্থিরতার ইঙ্গিত দেয়। পাকিস্তানের ক্রমবর্ধমান রিজার্ভ তাদের অর্থনীতির জন্য স্বস্তিদায়ক হলেও, এটি এখনও ভারতের তুলনায় অনেক কম। উভয় দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্রিয় রয়েছে।