মাজদিয়া স্টেশনে রবীন্দ্রনাথের স্মৃতি, সংরক্ষিত কবির চেয়ারে ইতিহাসের ছোঁয়া

নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের মাজদিয়া রেল স্টেশন শুধু একটি স্টেশন নয়, এটি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বহনকারী ঐতিহাসিক স্থান। কলকাতা থেকে কুষ্টিয়ার শিলাইদহ কুঠিবাড়ি যাওয়ার পথে রবীন্দ্রনাথ এই স্টেশনে অপেক্ষা করতেন। ব্রিটিশ আমলে ঢাকা মেলে যাতায়াতের সময় ট্রেন এখানে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়াত, আর কবি স্টেশনের একটি গেস্ট রুমে আরামকেদারায় বসে বিশ্রাম নিতেন, এমনকি লেখালিখিও করতেন। সেই ঘর এবং চেয়ার আজও রেল কর্তৃপক্ষ সযত্নে সংরক্ষণ করেছে। কাঁচের ঘরে রাখা সেই চেয়ার মাজদিয়ার গর্বের প্রতীক। “কবিগুরুর পদস্পর্শে মাজদিয়া ধন্য। তাঁর ব্যবহৃত চেয়ারটি দেখে আমরা গর্বিত,” বলেন স্থানীয় বাসিন্দা সন্তোষকুমার দাস।
শিলাইদহ কুঠিবাড়ি ছিল রবীন্দ্রনাথের পৈতৃক ভিটে, যেখানে তিনি জীবনের অনেকটা সময় কাটিয়েছেন এবং ‘গীতাঞ্জলি’ সহ অসংখ্য কবিতা, গান ও উপন্যাস রচনা করেছেন। অবিভক্ত ভারতের নদিয়া জেলার অধীনে থাকা কুষ্টিয়ায় তখন তিনি নিয়মিত যাতায়াত করতেন। মাজদিয়া স্টেশনের পর বানপুর এবং তারপর দর্শনা স্টেশন ছিল, যা এখন বাংলাদেশে। ট্রেনের দীর্ঘ অপেক্ষার সময়ে কবি এই স্টেশনের গেস্ট রুমে সময় কাটাতেন। কৃষ্ণগঞ্জের বিধায়ক আশিসকুমার বিশ্বাস বলেন, “রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিবিজড়িত এই চেয়ারটি আমাদের গর্ব। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সাহিত্যানুরাগীরা এটি দেখতে আসেন।” ২৫ বৈশাখে কবির জন্মদিনে এই স্টেশনে ভিড় জমান অনেকে, যারা তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আসেন। এই সংরক্ষিত ঘর ও চেয়ার শুধু রবীন্দ্রনাথের উপস্থিতিই ধরে রাখেনি, বরং সাহিত্য ও ইতিহাসের প্রতি ভালোবাসাকে জাগিয়ে রাখে। তবে, এই ঐতিহাসিক স্থানের প্রচার ও রক্ষণাবেক্ষণে আরও উদ্যোগ প্রয়োজন বলে মনে করেন স্থানীয়রা।