ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে তুরস্ক পাকিস্তানের পক্ষ নিয়েছিল। মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, তুরস্ক পাকিস্তান কে ক্ষেপণাস্ত্র থেকে শুরু করে ড্রোন পর্যন্ত দিতে সাহায্য করেছে। ভারতের জনগণ তুরস্কের এই আচরণ ভালোভাবে নেয়নি। ফলস্বরূপ, তারা তুরস্ককে উচিত শিক্ষা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় এবং ‘বয়কট তুর্কি অ্যান্ড আজারবাইজান’ প্রচার শুরু করে।

আসলে, তুরস্ক এবং আজারবাইজানের মতো দেশগুলোর অর্থনীতিতে পর্যটনের একটি বড় ভূমিকা রয়েছে। এই দুটি দেশের মোট জিডিপির ১০ শতাংশই আসে পর্যটন থেকে। আজারবাইজানের ক্ষেত্রে, ৭০ শতাংশ পর্যটকই ভারত থেকে আসেন। ভারত-পাক উত্তেজনার পর ভারতের জনগণের ‘বয়কট তুর্কি অ্যান্ড আজারবাইজান’ অভিযান শুরু হওয়ার প্রভাব ইতিমধ্যেই দেখা যাচ্ছে।

বয়কট তুর্কি অ্যান্ড আজারবাইজান

ভারতের জনগণ তুরস্ককে বয়কট করতে শুরু করেছে। এখন মানুষ আজারবাইজানের পরিবর্তে ব্যাংকক যেতে শুরু করেছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষজন এই দেশগুলোতে যাওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করছেন। শুধুমাত্র পূর্বাঞ্চল থেকেই ১৫০০০ পর্যটক এই দুটি দেশে যাওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করেছেন। অল ইন্ডিয়া ট্যুরিস্ট ফেডারেশনের মতে, গত কয়েক দিনে শুধু পূর্বাঞ্চল থেকেই ১৫০০০-এর বেশি পর্যটক তাদের পরিকল্পনা ও টিকিট বাতিল করেছেন। গত বছর ৩৭৫০০ জন এই দুটি দেশ ভ্রমণ করেছিলেন। এটি মাত্র তিন দিনের পরিসংখ্যান এবং আশা করা হচ্ছে এই সংখ্যা ২৫ থেকে ৩০ হাজারে পৌঁছাতে পারে। ট্র্যাভেল কো ম্পা নিগুলোও এতে লোকজনকে সাহায্য করছে। কক্স অ্যান্ড কিংস, এসওটিসি এবং ইজ মাই ট্রিপের মতো ট্র্যাভেল কো ম্পা নি এবং এয়ার ইন্ডিয়াসহ অনেক এয়ারলাইন্স কো ম্পা নি লোকজনের কাছ থেকে কোনো ক্যান্সেলেশন চার্জ নিচ্ছে না।

ব্যবসার উপর পড়বে প্রভাব

২০২৩-২৪ অর্থবছরে তুরস্কের সাথে ভারতের মোট বাণিজ্য ছিল ১০.৪৩ বিলিয়ন ডলার, যার মধ্যে রপ্তানি ছিল ৬.৬৫ বিলিয়ন ডলার এবং আমদানি ছিল ৩.৭৮ বিলিয়ন ডলার। তুরস্কের কাছে ভারতের রপ্তানি পণ্যের মধ্যে ছিল যন্ত্রপাতি, পাথর, প্লাস্টার, লোহা ও ইস্পাত, তৈলবীজ, অজৈব রসায়ন, মূল্যবান পাথর, তাজা আপেল ইত্যাদি।

চাহিদা আরও কমার আশঙ্কা

ভারত, তুরস্ক, আজারবাইজান এবং উজবেকিস্তানের মতো দেশগুলোর বয়কট শুরু হয়েছে। প্রতি বছর ভারত থেকে লক্ষ লক্ষ পর্যটক তুরস্ক এবং আজারবাইজানে যান। শুধু তাই নয়, ভারতে তুরস্কের অনেক পণ্যও আসে, যা এখানে প্রচুর বিক্রি হয়। তবে আগামী দিনে এর চাহিদা কমার সম্ভাবনা রয়েছে। আজ আমরা এই খবরের মাধ্যমে আপনাদের জানাতে চলেছি যে ভারতে তুরস্কের কী কী পণ্য আসে।

২.৫০ লক্ষ পর্যটক

ইনফো ইন্ডিয়ার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ভারত থেকে প্রায় ২.৫০ লক্ষ পর্যটক আজারবাইজান ভ্রমণ করেছেন। অন্যদিকে, তুরস্কের ক্ষেত্রে প্রায় ৩ লক্ষ পর্যটক ভারত থেকে তুরস্কে গিয়েছিলেন। ভ্রমণের সময় প্রত্যেক যাত্রী গড়ে ১০০০ মার্কিন ডলার অর্থাৎ ৮৫,০০০ টাকা খরচ করেছেন। এই হিসেবে পাকিস্তান সমর্থনকারী দেশগুলো গত বছর প্রায় ৪৬৯ কোটি টাকা আয় করেছে।