গঙ্গা ও যমুনার মাছ: সিজফায়ারের পর নাগার্জুনের কবিতার প্রতিধ্বনি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার এক্স প্রোফাইলে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সিজফায়ারের খবর শেয়ার করেছেন। তবে, এই ঘোষণার ধরন ও ভাষা অনেকের পছন্দ হয়নি। ট্রাম্পের পোস্ট নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় কটাক্ষের ঝড় উঠেছে এবং নানা প্রশ্ন উত্থাপিত হচ্ছে। ভারত ও পাকিস্তান পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে সিজফায়ারে সম্মত হলেও, আমেরিকা কেন প্রথমে এই খবর প্রকাশ করল? এই প্রশ্ন সবার মুখে। চমকপ্রদ বিষয় হলো, ট্রাম্প এরপর উভয় দেশের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ানোর ইচ্ছাও প্রকাশ করেছেন। এই ঘটনার মধ্যে হিন্দি কবি বাবা নাগার্জুনের একটি পুরনো কবিতার সারমর্ম মনে পড়ে, যেখানে মধ্যস্থতাকারীর উদ্দেশ্য নিয়ে কটাক্ষ করা হয়েছিল।
নাগার্জুনের সেই কবিতা, ‘সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা’, প্রায় পঞ্চাশ বছর আগে লেখা। সত্তরের দশকে রাজনীতির পটপরিবর্তনের সময়ে নেতাদের উচ্চাভিলাষের দৌরাত্ম্য তুলে ধরে এই কবিতায় রাজনীতির পতনশীল চরিত্রের সমালোচনা করা হয়। কবিতার সারাংশ—নেতারা মূল সমস্যার সমাধানের চেয়ে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধিতে বেশি মনোযোগী। কবিতায় গঙ্গা ও যমুনার মাছ, যারা সঙ্গম থেকে এগিয়ে যায়, পরস্পরের সঙ্গে সৌন্দর্যের প্রতিযোগিতায় মেতে ওঠে। একটি কচ্ছপ মধ্যস্থতার ভূমিকায় এসে নিজেকে সবচেয়ে সুন্দর বলে দাবি করে। কিন্তু মাছেরা তার ধূর্ততা বুঝতে পেরে সঙ্গমের জলে ফিরে যায়। কচ্ছপের মধ্যস্থতা আসাম্পূর্ণ থেকে যায়।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে, ভারত সবসময় বলে আসছে যে কাশ্মীর ইস্যুতে তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতার প্রয়োজন নেই। পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সক্ষমতা ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর মাধ্যমে প্রমাণিত। ট্রাম্প পূর্বেও কাশ্মীরে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছিলেন, যা ভারত প্রত্যাখ্যান করেছিল। এবারও তিনি এক্স-এ মধ্যস্থতার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন এবং বাণিজ্য বৃদ্ধির কথা বলেছেন। তবে, ভারতের অবস্থান অটল—কাশ্মীরে কোনো মধ্যস্থতা মেনে নেওয়া হবে না।