২২ মিনিটের ভাষণে পিএম মোদী এমন কী বললেন যে চীন ও তুরস্কেরও ভয় পাওয়ার প্রয়োজন?

২২ মিনিটের ভাষণে পিএম মোদী এমন কী বললেন যে চীন ও তুরস্কেরও ভয় পাওয়ার প্রয়োজন?

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে। পহেলগামে নিরীহ নাগরিকদের হত্যার পর ভারত ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর মাধ্যমে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু এই পদক্ষেপের পর জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২২ মিনিটে এমন কথা বলেছেন, যা কেবল পাকিস্তান নয়, চীন ও তুরস্কের মতো দেশকেও হতবাক করেছে। এই ভাষণ শুধু ভারতের প্রতিক্রিয়ার ইঙ্গিত নয়, বরং এক নতুন কৌশলগত পরিবর্তনের ঘোষণা, যা সন্ত্রাসবাদের পক্ষে থাকা দেশগুলোকেও লক্ষ্যবস্তু করার স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয়।

বেজিং ও আঙ্কারায় প্রতিধ্বনি
পিএম মোদী স্পষ্ট বলেছেন, “সন্ত্রাস ও আলোচনা একসঙ্গে চলতে পারে না। সন্ত্রাস ও বাণিজ্য একসঙ্গে হয় না। জল ও রক্ত একসঙ্গে বইতে পারে না।” এই বক্তব্য পাকিস্তানের জন্য হলেও, এর প্রতিধ্বনি বেজিং ও আঙ্কারায় শোনা গেছে। কারণ, এই দুই দেশের ইতিহাস বলে, পাকিস্তান যখনই সন্ত্রাসবাদ নিয়ে কোণঠাসা হয়েছে, তারা তার পক্ষে দাঁড়িয়েছে। মোদী বলেছেন, “এখন আমরা সন্ত্রাসের পৃষ্ঠপোষক সরকার ও তার প্রভুদের আলাদা করে দেখব না।” এই বক্তব্য বিশ্ব মঞ্চে পাকিস্তানের পক্ষে ওকালতি করা দেশগুলোর জন্য, যারা পরোক্ষভাবে সন্ত্রাসকে সমর্থন দিয়ে শান্তির কথা বলে। চীন, যারা জাতিসংঘে মাসুদ আজহারের মতো সন্ত্রাসীদের বাঁচিয়েছে, এখন ভারতের নিরাপত্তা দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে এসেছে।

পাকিস্তানের সঙ্গে তুরস্ককেও সতর্কবার্তা
তুরস্কের মনোভাবও ভারতের জন্য উদ্বেগের কারণ। কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ ও আন্তর্জাতিক মঞ্চে পাকিস্তানের বক্তব্যের সমর্থন তুরস্কের নীতির অংশ। মোদী বলেছেন, “আমরা আমাদের শর্তে প্রতিক্রিয়া দেব এবং সন্ত্রাসের উৎস যেখান থেকেই হোক, সেখানে গিয়ে ব্যবস্থা নেব।” এটি ইঙ্গিত দেয় যে ভারত এখন কূটনৈতিকভাবেও এই দেশগুলোর বিরুদ্ধে মোর্চা খুলতে পারে। তিনি আরও বলেন, “আমরা প্রতিক্রিয়া স্থগিত রেখেছি, কিন্তু এটি স্থায়ী নয়।” ভারতের তিন বাহিনী ও সীমান্তরক্ষী বাহিনী সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। পরবর্তী হামলা হলে ভারত কেবল জবাব দেবে না, সিদ্ধান্তমূলক ও প্রস্তুতির সঙ্গে দেবে। “কোনো পারমাণবিক হুমকি ভারত সহ্য করবে না”—এই বাক্য ভারতের কৌশলগত দৃঢ়তা প্রকাশ করে।

পাকিস্তানের ঢাল হওয়া ভারী পড়তে পারে
এই ভাষণ চীন ও তুরস্কের জন্য ভীতিকর কারণ ভারত প্রথমবার স্পষ্ট করেছে যে সন্ত্রাসবাদকে কেবল সীমান্তের ঘাঁটি থেকে নয়, এর বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খলের দিকেও নজর দেওয়া হবে। এতদিন ভারত কেবল পাকিস্তানের কাছে জবাবদিহি চাইত, কিন্তু এখন সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ককে কূটনৈতিকভাবে সমর্থন দেওয়া দেশগুলোও সমান দোষী। এই ২২ মিনিটের ভাষণ ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী নীতিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে। এখন কেবল এলওসি-র ওপারে সার্জিক্যাল বা বিমান হামলা নয়, বিশ্ব মঞ্চেও ভারত সন্ত্রাসের পৃষ্ঠপোষক দেশগুলোকে চিহ্নিত করছে। এ কারণে চীন ও তুরস্ক, যারা পাকিস্তানের ঢাল ছিল, তাদের এখন সতর্কতার সঙ্গে পা ফেলতে হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *