তুরস্কে রয়েছে ‘নরকের দ্বার’… যে যায়, সে আর ফিরে আসে না!

তুরস্কের প্রাচীন শহর হেরাপোলিসে অবস্থিত এক রহস্যময় মন্দির, যা ‘নরকের দ্বার’ বা ‘প্লুটোর দ্বার’ নামে পরিচিত। এই মন্দিরে ঢোকা মানেই মৃত্যু, কারণ এখানে ঘন অন্ধকার আর প্রাণঘাতী পরিবেশে কেউ বেঁচে ফিরতে পারেনি। প্রাচীন রোমান পুরাণে বিশ্বাস করা হতো, এই মন্দিরে পাতালের দেবতা প্লুটোর প্রভাব রয়েছে, যার কারণে মানুষ, এমনকি পশু-পাখিও এখানে প্রাণ হারায়। স্থানীয়রা এই জায়গায় যেতে ভয় পায়, এবং পর্যটকদেরও প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়।
২০১৮ সালে এই মন্দিরের রহস্যের পর্দা উন্মোচিত হয়। প্রাচীন গ্রিক ভূগোলবিদ স্ট্র্যাবো তার ‘জিওগ্রাফিকা’ গ্রন্থে উল্লেখ করেছিলেন, এই গুহায় প্রবেশকারী কোনো প্রাণী বাঁচে না। তিনি পরীক্ষা হিসেবে গুহায় চড়ুই পাঠিয়েছিলেন, যারা কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে মারা যায়। বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেন, মন্দিরের নিচ থেকে ক্রমাগত কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস নির্গত হয়, যার ঘনত্ব ৯১ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছায়। এই বিষাক্ত গ্যাসই মানুষ ও প্রাণীদের মৃত্যুর কারণ। বিশেষ করে ভোরের সময় গ্যাসের ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি থাকে, যা সূর্যের আলোয় কিছুটা কমে।
তবে স্থানীয়দের বিশ্বাস, এই মন্দিরে প্রাচীনকালে বলি দেওয়া হতো, এবং এখানে পাওয়া পশু-পাখির কঙ্কাল তার প্রমাণ। এই বিশ্বাস বিজ্ঞানের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে। কেউ কেউ এটিকে অন্ধবিশ্বাস বললেও, অনেকে এখনো এই মন্দিরকে ‘নরকের দ্বার’ মনে করে ভয় পান। প্রত্নতাত্ত্বিকদের মতে, এই মন্দির রোমান যুগে তীর্থস্থান ছিল, যেখানে বলির প্রথা প্রচলিত ছিল। তবে কার্বন ডাই অক্সাইডের উপস্থিতি এই রহস্যময় মৃত্যুর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিলেও, স্থানীয় বিশ্বাস এখনো রহস্যের আবরণে ঢাকা।
ডিসক্লেমার: এই খবরটি ধর্মীয় ও স্থানীয় বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে লেখা। এর সত্যতা যাচাই করা হয়নি।