পহলগাম হামলার পর মোদির হাতে ভারতের কঠোর পাল্টা স্ট্রাইক পরিকল্পনা

জম্মু-কাশ্মীরের পহলগামে সন্ত্রাসী হামলার সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সৌদি আরব সফরে ছিলেন। তবে খবর পাওয়া গেছে, মোদি ইতিমধ্যেই সৌদি আরবে এই হামলার জবাব দেওয়ার বড় পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কঠোর ও বড় আক্রমণ চালানোর রোডম্যাপ এই সময়ই সৌদি আরবে তৈরি হয়।
বিশ্বস্ত সূত্রের খবর অনুযায়ী, পহলগাম হামলার পর পাকিস্তানকে কড়া জবাব দেওয়ার সিদ্ধান্ত মোদি সৌদি আরবেই নিয়েছিলেন। মোদি তখনই ঠিক করেছিলেন যে এবার বড় কিছু করা হবে, যাতে পাকিস্তান, ভারত ও বিশ্বের কাছে একটি শক্তিশালী বার্তা যায়।
অপারেশন সিনদুর শুরু করার আগে এই জবাবী কর্মসূচির জন্য ৪৫টিরও বেশি টপ সিক্রেট বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এই বৈঠকে এনএসএ (জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা), সিডিএস (সার্বিক সামরিক প্রধান), তিনটি বাহিনীর প্রধান, আইবি এবং রাউ (গোপন সংস্থা) প্রধানরা অংশগ্রহণ করেন। এই বৈঠকগুলো সম্পূর্ণ গোপনে, আলাদা স্থানে হয়েছিল এবং প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বাড়িতে হওয়া অন্যান্য বৈঠকের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা ছিল।
একজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তার কাছে একটি ‘ওয়ার রুম’ তৈরি ছিল, যেখান থেকে অপারেশন সিনদুরের সময়ে সব কাজ রিয়েল টাইমে মনিটরিং করা হচ্ছিল এবং প্রধানমন্ত্রীকে সব খবর দেওয়া হচ্ছিল। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সতর্কতা ছিল যে ভারতের জবাবী আক্রমণের পর পাকিস্তান ভারতের বিমান ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র বা বিমান হামলা চালাতে পারে। তাই মোদি বলেন, পাকিস্তানের স্ট্র্যাটেজিক বিমান ঘাঁটি লক্ষ্য করা হোক এবং কঠোর বার্তা পাঠানো হোক।
অপারেশন সিনদুর ভারতের তরফ থেকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে চালানো একটি শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া ছিল। ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পহলগামে সন্ত্রাসীদের হামলায় ২৬ জন পর্যটকের মৃত্যু হয়, যা গোটা দেশের রোষের জোয়ার সৃষ্টি করে। মোদি দ্রুত দেশে ফিরে সেনা প্রধানদের সঙ্গে একের পর এক বৈঠক করেন। ৬-৭ মে রাতের মধ্যেই বিশ্ব দেখল ভারত পাকিস্তানের সন্ত্রাস ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে চুপ থাকছে না, শক্তিশালী জবাব দিচ্ছে।
অপারেশনে পাকিস্তানের ৯টি সন্ত্রাসী ঘাঁটি ধ্বংস করা হয় এবং ১০০’র বেশি সন্ত্রাসী নির্মূল করা হয়। এর পর পাকিস্তানও হামলা চালানোর চেষ্টা করেছিল, যা ব্যর্থ হয় এবং শেষমেষ দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়।
অপারেশনের পর মোদি ১৩ মে পাঞ্জাবের আদমপুর বিমানঘাঁটিতে যান এবং সেখানে ভারতীয় সেনাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি বলেন, “ভারত মাতার জয়ের শক্তি গোটা বিশ্ব দেখেছে। ভারত মাতার জয় বললেই শত্রুরা কাঁপে। আমাদের বোন-বোনেদের সিঁদুর কেড়ে নেওয়া হয়েছে, তাই আমরা সন্ত্রাসীদের ঘরে ঢুকে চূর্ণবিচূর্ণ করেছি।”