আপনার গর্ভাবস্থার সুস্থতার সঙ্গে কি আপনার সন্তানের হৃদয়ের স্বাস্থ্য যুক্ত?

নতুন দিল্লি: গর্ভাবস্থা শারীরিক ও মানসিকভাবে জীবন পরিবর্তনকারী অভিজ্ঞতা। মায়ের গর্ভাবস্থার স্বাস্থ্য সন্তানের জন্মের ওজন ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে, তবে অনেকেই জানেন না যে এটি সন্তানের হৃদয়ের স্বাস্থ্যের মতো দীর্ঘমেয়াদি বিষয়কেও প্রভাবিত করে। নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, গর্ভাবস্থায় মায়ের স্বাস্থ্য, রক্তচাপ, খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাত্রা সন্তানের কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে। ভারতে, যেখানে তরুণদের মধ্যেও হৃদরোগ বাড়ছে, এই তথ্য গুরুত্ব সহকারে বিবেচনার দাবি রাখে। গর্ভকালীন উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, রক্তশূন্যতা এবং মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টের ঘাটতি ভারতীয় মহিলাদের মধ্যে সাধারণ, তাই মাতৃস্বাস্থ্য এখন জাতীয় স্বাস্থ্যের অগ্রাধিকার।
কীভাবে মাতৃস্বাস্থ্য শিশুর হৃদয়কে প্রভাবিত করে?
গর্ভাবস্থার প্রথম কয়েক সপ্তাহে শিশুর হৃদপিণ্ড ও রক্তনালী গঠিত হয়। মায়ের উচ্চ রক্তচাপ, প্রিক্ল্যাম্পসিয়া বা অপুষ্টি এই বিকাশকে প্রভাবিত করতে পারে। হৃদপিণ্ড ও কিডনি গর্ভের পরিবেশের পরিবর্তনের প্রতি সংবেদনশীল, যা কাঠামোগত ও কার্যকরী পরিবর্তন ঘটিয়ে শিশুকে প্রাপ্তবয়স্ক হলে উচ্চ রক্তচাপ, বিপাকীয় সমস্যা এবং হৃদরোগের ঝুঁকিতে ফেলে। “ফিটাল প্রোগ্রামিং” নামে পরিচিত এই তত্ত্ব গবেষণায় সমর্থিত। গর্ভকালীন উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত মায়েদের সন্তানদের শৈশবে উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, যা পরে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়।
ভারতের প্রেক্ষাপটে ঝুঁকি
ভারতে সাংস্কৃতিক ও পরিবেশগত কারণে গর্ভবতী মহিলারা ঝুঁকিতে থাকেন। গ্রামীণ এলাকায় প্রসবপূর্ব যত্নের অভাব, অস্থির জীবনযাত্রা, অতিরিক্ত লবণ ও প্রক্রিয়াজাত খাবারের ব্যবহার এবং গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের দেরিতে নির্ণয় মাতৃস্বাস্থ্য জটিল করে। “দুজনের জন্য খাওয়া”র সামাজিক ভ্রান্তি অতিরিক্ত খাওয়া বা পুষ্টিহীন খাদ্য গ্রহণের কারণ হয়। তবে, সচেতনতা ও সময়মতো হস্তক্ষেপে মা ও শিশুর ক্ষতি অনেকাংশে কমানো সম্ভব। নিয়মিত প্রসবপূর্ব পর্যবেক্ষণ, স্থানীয় সুষম খাদ্য (রাগি, আমলকি, পালংশাক, ডাল), হালকা ব্যায়াম (হাঁটা, প্রসবপূর্ব যোগ) এবং প্রয়োজনে চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ।