আন্তর্প, ১৬ মে: পলাতক হীরা ব্যবসায়ী মেহুল চোকসির জামিনের আবেদনের শুনানির আগে ভারতীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআই বেলজিয়ামের আন্তর্প আদালতে চারটি নতুন ব্যাঙ্ক জালিয়াতির মামলার প্রমাণ এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পাঠিয়েছে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে চোকসির প্রত্যর্পণের দাবিকে আরও শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে ভারত। ৬৫ বছর বয়সী চোকসিকে গত ১১ এপ্রিল সিবিআইয়ের প্রত্যর্পণের অনুরোধে আন্তর্প পুলিশ গ্রেপ্তার করে, এবং তিনি বর্তমানে সেখানকার একটি কারাগারে রয়েছেন। গত ২২ এপ্রিল তার জামিনের আবেদন খারিজ করে আন্তর্পের আপিল আদালত বলেছিল, তার পলায়নের আশঙ্কা “বৈধ”।
সিবিআই ২০১৮ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে চোকসি এবং তার সংস্থার বিরুদ্ধে প্রায় ১৩,০০০ কোটি টাকার ছয়টি ব্যাঙ্ক জালিয়াতির মামলা দায়ের করেছে। একজন আধিকারিক জানিয়েছেন, “গত বছর আগস্টে প্রত্যর্পণের অনুরোধের সঙ্গে আমরা দুটি মামলার প্রমাণ পাঠিয়েছিলাম—২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে পিএনবি-র ৬,০৯৭ কোটি টাকার জালিয়াতি এবং ২০২২ সালের মে মাসে আইএফসিআই-এর ২৫ কোটি টাকার জালিয়াতি। এখন আমরা চারটি নতুন মামলার প্রমাণ পাঠিয়েছি।” এই মামলাগুলির মধ্যে রয়েছে: ২০২২ সালের জুলাইয়ে ক্যানারা ব্যাঙ্কের নেতৃত্বে ৫৫.২৭ কোটি টাকার জালিয়াতি, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের নেতৃত্বে ২৮টি ব্যাঙ্কের ৫,৫৬৪ কোটি টাকার জালিয়াতি, পিএনবি-র নেতৃত্বে নয়টি ব্যাঙ্কের ৮০৭ কোটি টাকার জালিয়াতি এবং পিএনবি-র আরেকটি ৩৭৫ কোটি টাকার জালিয়াতি।
সিবিআই জানিয়েছে, চোকসি ইচ্ছাকৃতভাবে আদালতের কার্যক্রম এড়িয়ে নতুন দেশে প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়া শুরু করে সময়ক্ষেপণের কৌশল অবলম্বন করেছেন। একজন আধিকারিক বলেন, “প্রথমে আমরা যুক্তরাষ্ট্রে তার বিরুদ্ধে প্রত্যর্পণের অনুরোধ পাঠিয়েছিলাম; তিনি সেখান থেকে অ্যান্টিগুয়া ও বারবুডায় পালিয়ে যান। অ্যান্টিগুয়ার আদালত ভারতের পক্ষে রায় দেওয়ার সম্ভাবনা দেখে তিনি বেলজিয়ামে চলে যান।” ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এখন একটি ইউরোপীয় আইনি দল নিয়োগের পরিকল্পনা করছে এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা এবং জাতিসংঘের দুটি কনভেনশন উল্লেখ করে প্রত্যর্পণের দাবি জোরদার করছে। বেলজিয়াম ১৯০১ সালের প্রত্যর্পণ চুক্তির “দ্বৈত অপরাধ” ধারার ভিত্তিতে ভারতের অনুরোধ গ্রহণ করেছে।