রামগোপালের জাতিগত মন্তব্যে সপার দলিত রাজনীতিতে সংকট, অখিলেশের পিডিএ মিশন কি বিপাকে?

উত্তর প্রদেশে ক্ষমতায় ফিরতে সমাজবাদী পার্টির (সপা) প্রধান অখিলেশ যাদব তাঁর ‘পিডিএ’ (পিছড়া, দলিত, আল্পসংখ্যক) কৌশলকে আরও জোরদার করতে দলিত এজেন্ডায় জোর দিচ্ছেন। কিন্তু সপার জাতীয় মহাসচিব রামগোপাল যাদবের ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর বীরাঙ্গনা এয়ার ফোর্স উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিংয়ের জাতি নিয়ে মন্তব্য রাজনৈতিক ঝড় তুলেছে। বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি) থেকে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) পর্যন্ত সপাকে ‘দলিত-বিরোধী’ হিসেবে কাঠগড়ায় তুলছে, যা অখিলেশের দলিত ভোট সংগঠনের পরিকল্পনায় বড় ধাক্কা হতে পারে।
বৃহস্পতিবার মুরাদাবাদের বিলারি এলাকায় এক জনসভায় রামগোপাল যাদব ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর সাফল্যকে পিডিএ-র জয় হিসেবে তুলে ধরতে গিয়ে বিতর্কে জড়ান। তিনি বলেন, “কর্নেল সোফিয়া কুরেশি মুসলিম, ব্যোমিকা সিং হরিয়ানার জাটব, চামার এবং এয়ার মার্শাল এ কে ভারতী পূর্ণিয়ার যাদব। মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রী বিজয় শাহ সোফিয়াকে তাঁর ধর্মের জন্য গালি দিয়েছেন, কিন্তু ব্যোমিকাকে রাজপুত ভেবে কিছু বলেননি। এই যুদ্ধ পিডিএ-র অফিসাররা লড়েছেন।” এই মন্তব্যে ‘চামার’ শব্দের ব্যবহার দলিত সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি করেছে। মুরাদাবাদের সিভিল লাইন্স থানায় রামগোপালের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহ ও এসসি/এসটি অ্যাক্টে মামলার আবেদন জমা পড়েছে।
বিজেপি ও বিএসপি এই ঘটনায় সপার বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছে। উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেন, “সেনার উর্দি জাতিবাদের চশমায় দেখা হয় না। সপার এই মন্তব্য জাতীয়তাবাদকে ভাগ করার প্রচেষ্টা।” বিএসপি প্রধান মায়াবতী বলেন, “অপারেশন সিন্দুরে সেনার পরাক্রমে দেশ গর্বিত। সেনাকে জাতি-ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ করা লজ্জাজনক।” বিজেপির উপ-মুখ্যমন্ত্রী ব্রজেশ পাঠক রামগোপালের মন্তব্যকে “দলিত সমাজের প্রতিভা ও সম্মানের উপর আক্রমণ” বলে সমালোচনা করেছেন।
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে অখিলেশের পিডিএ কৌশল ৩৭টি আসন জিতিয়েছে। ২০২৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনের জন্য তিনি দলিত ভোটারদের, বিশেষ করে মায়াবতীর ভোটব্যাঙ্কের দিকে নজর দিয়েছেন। সপা দলিত নেতা দদ্দু প্রসাদ ও রামজিলাল সুমনকে গুরুত্ব দিয়ে এই কৌশল এগিয়ে নিচ্ছে। কিন্তু রামগোপালের মন্তব্য দলিত সম্প্রদায়ের ক্ষোভ জাগিয়েছে, যা সপার দলিত রাজনীতিতে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।