ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে তালিবান, মেডিকেল ও ব্যবসায়িক ভিসার জন্য আবেদন

ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে তালিবান, মেডিকেল ও ব্যবসায়িক ভিসার জন্য আবেদন

তালিবান-শাসিত আফগানিস্তান ভারতের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে দুটি গুরুত্বপূর্ণ সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে: রোগীদের চিকিৎসার জন্য মেডিকেল ভিসা এবং ব্যবসায়ীদের জন্য ব্যবসায়িক ভিসা। আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি এবং ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের মধ্যে ১৫ মে এক উচ্চপর্যায়ের টেলিফোনিক আলোচনায় এই আবেদন উত্থাপিত হয়। পাকিস্তানের সঙ্গে তালিবানের সম্পর্কের অবনতির প্রেক্ষাপটে এই আলোচনা ভারত-আফগান সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে। মুত্তাকি জানিয়েছেন, আফগান নাগরিক, বিশেষ করে ব্যবসায়ী ও রোগীরা, ভারতে ব্যবসা ও চিকিৎসার সুযোগ চান। তিনি ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার পাশাপাশি ভারতে আটক কিছু আফগান বন্দির মুক্তি ও দেশে ফিরিয়ে আনার অনুরোধ করেন।

আলোচনায় উভয় দেশ চাবাহার বন্দরের কৌশলগত গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছে এবং এই আঞ্চলিক সংযোগ কেন্দ্রের দ্রুত উন্নয়নে সম্মত হয়েছে। তালিবানের মুখপাত্র হাফিজ জিয়া আহমদ জানান, “মুত্তাকি ভারতকে একটি গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক অংশীদার হিসেবে উল্লেখ করে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারে আশাবাদী।” তিনি আরও বলেন, আফগানিস্তান ভারতের সঙ্গে সুষ্ঠু সম্পর্ক ও ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি চায়। এই আলোচনায় পাহালগাম সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা এবং পাকিস্তানের মিথ্যা প্রচারণার বিরুদ্ধে তালিবানের দৃঢ় অবস্থানের জন্য জয়শঙ্কর তাঁর প্রশংসা করেন। এই পদক্ষেপ পাকিস্তানের প্রভাব কমাতে ভারতের কৌশলগত সাফল্য বলে মনে করা হচ্ছে।

ভারতের জন্য এই আবেদন পূরণ করা সহজ নয়। ভারত এখনও তালিবান সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়নি, এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ভিসা সংক্রান্ত নিরাপত্তা উদ্বেগ তুলে ধরেছে। ২০২১ সালে তালিবানের ক্ষমতা গ্রহণের পর ভারত কাবুলে দূতাবাস বন্ধ করে সমস্ত ভিসা বাতিল করেছিল। বর্তমানে শুধুমাত্র জরুরি ই-ভিসার মাধ্যমে সীমিত আফগানদের ভারতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। তালিবান আশ্বাস দিয়েছে যে ভিসাপ্রাপ্তদের কঠোর পরীক্ষা করা হবে, যাতে নিরাপত্তার ঝুঁকি না থাকে।

এই উদ্যোগ ভারত-আফগান সম্পর্ককে নতুন মাত্রা দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। ভিসা সুবিধা চালু হলে আফগান নাগরিকদের জন্য তা বড় স্বস্তি হবে এবং ভারতের আঞ্চলিক নেতৃত্বকে শক্তিশালী করবে। এটি পাকিস্তানের কাছে একটি স্পষ্ট বার্তা যে আফগানিস্তান আর তাদের উপর নির্ভরশীল নয়। জয়শঙ্কর বলেন, “আমরা আফগান জনগণের সঙ্গে আমাদের ঐতিহ্যবাহী বন্ধুত্ব এবং তাদের উন্নয়নের জন্য সহযোগিতা অব্যাহত রাখব।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *