মমতা-অভিষেকের নেতৃত্বে তৃণমূলের নতুন কৌশল: সংগঠনে ঝাঁকুনি, নেতৃত্বে পরিবর্তন

কলকাতা, ১৬ মে ২০২৫: পশ্চিমবঙ্গে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল কংগ্রেস সাংগঠনিক কাঠামোতে বড় ধরনের রদবদল করেছে। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে উত্তর কলকাতার সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেলা সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে, বীরভূমের প্রভাবশালী নেতা অনুব্রত মণ্ডলের ক্ষমতাও কাটছাঁট করা হয়েছে। শুক্রবার তৃণমূলের পক্ষ থেকে জেলা সভাপতি ও চেয়ারপার্সনদের নতুন তালিকা প্রকাশিত হয়েছে, যা রাজনৈতিক মহলে তীব্র আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
উত্তর কলকাতায় সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাপতি পদে ছুটি ঘোষণার পাশাপাশি ‘বীরভূম মডেল’ প্রয়োগ করা হয়েছে। সুদীপের জায়গায় অতিন ঘোষ, জীবন সাহা, নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়, পরেশ পাল, শশী পাঁজা, সুপ্তি পাণ্ডে, স্বর্ণকমল সাহা, তপন সমাদ্দার ও বিবেক গুপ্তার নেতৃত্বে নয় সদস্যের একটি কোর কমিটি গঠন করা হয়েছে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, “এই পদক্ষেপের মাধ্যমে দল ব্যক্তিকেন্দ্রিক নয়, সমষ্টিগত নেতৃত্বের উপর জোর দিচ্ছে।” বীরভূমে জেলা সভাপতির পদ বিলুপ্ত করে একটি কোর কমিটি গঠন করা হয়েছে, যেখানে অনুব্রত মণ্ডল সদস্য হলেও তাঁর একক প্রভাব কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।
একসময় বীরভূমে অনুব্রত মণ্ডলের একাধিপত্য ছিল অটুট। কিন্তু ভ্রষ্টাচার মামলায় গ্রেপ্তার ও দীর্ঘ জেলবাসের পর তাঁর প্রভাব কমে যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে বীরভূমের দায়িত্ব নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন, এবং এখন কমিটির মাধ্যমে সংগঠন পরিচালনার কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, “২০২৬-এর নির্বাচনের আগে তৃণমূল সংগঠনকে আরও গতিশীল করতে চায়। সুদীপ ও তাপস রায়ের মধ্যে সভাপতি পদ নিয়ে বিতর্কও এই সিদ্ধান্তের পেছনে প্রভাব ফেলেছে।”
এই রদবদল তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ কৌশলের একটি নতুন দিশা নির্দেশ করছে। বিশ্লেষকদের মতে, মমতা ও অভিষেক দলকে আরও শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ করতে চাইছেন, যাতে আসন্ন নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তোলা যায়।