অর্থনৈতিক অস্থিরতায় টেক শিল্পে সংকট: মাইক্রোসফট, গুগল, অ্যামাজনের বিশাল ছাঁটাই ঘোষণা

নিউ ইয়র্ক, ১৬ মে ২০২৫: বিশ্বব্যাপী টেক শিল্প ২০২৫ সালে আরেক দফা বড় ধরনের ছাঁটাইয়ের মুখোমুখি। মাইক্রোসফট, গুগল, অ্যামাজন এবং ক্রাউডস্ট্রাইকের মতো প্রযুক্তি জায়ান্টরা অর্থনৈতিক অস্থিরতা এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) প্রভাবের কারণে হাজার হাজার চাকরি কমিয়ে দিচ্ছে। লেঅফস.এফওয়াই-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালে এখন পর্যন্ত ১৩০টি কো ম্পা নিতে ৬১,২২০ জন কর্মী চাকরি হারিয়েছেন। এই ছাঁটাইয়ের পেছনে রয়েছে দক্ষতা বাড়ানো এবং সম্পদের পুনর্বিন্যাসের কৌশল।
মাইক্রোসফট সবচেয়ে বড় ছাঁটাই ঘোষণা করেছে। ১৩ মে তারিখে কো ম্পা নিটি ৬,০০০ কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা তার ২,২৮,০০০ জনের বিশ্বব্যাপী কর্মীবাহিনীর ৩%। এই ছাঁটাই ওয়াশিংটন রাজ্যে প্রায় ২,০০০ কর্মীকে প্রভাবিত করেছে। মাইক্রোসফটের মুখপাত্র জানান, “এই পদক্ষেপ গতিশীল বাজারে প্রতিযোগিতা বজায় রাখতে এবং প্রকৌশলীদের অনুপাত বাড়াতে নেওয়া হয়েছে।” এর আগে জানুয়ারিতে কো ম্পা নিটি পারফরম্যান্স-ভিত্তিক ছোট পরিসরে ছাঁটাই এবং গেমিং ও সেলস বিভাগে কিছু পদ কমিয়েছিল।
গুগলও ছাঁটাইয়ের তালিকায় রয়েছে। মে মাসের শুরুতে কো ম্পা নিটি তার গ্লোবাল বিজনেস ইউনিট থেকে প্রায় ২০০ কর্মীকে ছাঁটাই করেছে। এই দলটি বিক্রয় ও অংশীদারিত্ব পরিচালনা করে এবং এখন “বৃহত্তর সহযোগিতা” বাড়াতে পুনর্গঠনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এর আগে এপ্রিলে প্ল্যাটফর্মস অ্যান্ড ডিভাইসেস ইউনিট (অ্যান্ড্রয়েড, পিক্সেল, ক্রোম) এবং ফেব্রুয়ারিতে ক্লাউড বিভাগে কয়েকশো চাকরি কমানো হয়েছিল। অ্যামাজনও এই মাসে তার ডিভাইসেস অ্যান্ড সার্ভিসেস ইউনিট থেকে প্রায় ১০০ কর্মী ছাঁটাই করেছে, যা ইকো স্পিকার, অ্যালেক্সা, কিন্ডল এবং জুওক্সের মতো পণ্য পরিচালনা করে। অ্যামাজন জানায়, এই ছাঁটাই “অপ্রয়োজনীয় স্তর” দূর করতে এবং পণ্যের রোডম্যাপের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে করা হয়েছে।
ক্রাউডস্ট্রাইকও গত সপ্তাহে ৫% কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে। কো ম্পা নিটি মুনাফা ও দীর্ঘমেয়াদি সাফল্যের উপর জোর দেওয়ার জন্য এই পদক্ষেপ নিয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এআই-এর উত্থান এবং অর্থনৈতিক চাপের কারণে টেক কো ম্পা নিগুলো পুনর্গঠনের দিকে ঝুঁকছে। একজন শিল্প বিশেষজ্ঞ বলেন, “এই ছাঁটাই শুধু খরচ কমানো নয়, বরং ভবিষ্যতের প্রযুক্তি-চালিত বাজারের জন্য প্রস্তুতি।” এই প্রবণতা টেক শিল্পের কর্মীদের জন্য অনিশ্চয়তা বাড়াচ্ছে।