দেরাদুন-মুসৌরি রোপওয়ে ২০২৬ সালে চালু, সময় বাঁচাবে, পর্যটন বাড়াবে
ভারতের দীর্ঘতম যাত্রীবাহী রোপওয়ে, ৫.২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মনো-কেবল ডিটাচেবল গন্ডোলা সিস্টেম, দেরাদুন ও মুসৌরিকে সংযুক্ত করবে। ২০২৬ সালের সেপ্টেম্বরে চালু হতে যাওয়া এই রোপওয়ে ১,০০০ মিটার উচ্চতায় উঠবে এবং দুই শহরের মধ্যে ভ্রমণের সময় ১.৫-৩ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে মাত্র ২০ মিনিটে নিয়ে আসবে। এই উদ্যোগ উত্তরাখণ্ডের পর্যটনকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে এবং ঘন ট্রাফিকের বিকল্প হিসেবে সুবিধাজনক যাতায়াতের সুযোগ দেবে।

এফআইএল, এসআরএম ও পোমা এসএএস-এর যৌথ উদ্যোগ
৩০০ কোটি টাকার এই প্রকল্পটি মুসৌরি স্কাই কার প্রাইভেট লিমিটেডের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে, যা এফআইএল ইন্ডাস্ট্রিজ, এসআরএম ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ফ্রান্সের পোমা এসএএস-এর কনসোর্টিয়াম। এফআইএল ইন্ডাস্ট্রিজ, ভারতের শীর্ষস্থানীয় সিইএন-প্রত্যয়িত রোপওয়ে অপারেটর, জম্মু-কাশ্মীরে ‘স্কাইভিউ বাই এম্পায়ারিয়ান’ প্রকল্পের জন্য পরিচিত। পোমা এসএএস ইউরোপীয় মানের নিরাপত্তা ও প্রযুক্তি নিয়ে এসেছে, এবং অনেক উপাদান পোমা ইন্ডিয়ার মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হবে। এসআরএম ইঞ্জিনিয়ারিং আর্থিক ও পরিচালন দক্ষতা যোগ করছে। “এই সহযোগিতা ভারতের সবচেয়ে নিরাপদ ও উন্নত কেবল কার সিস্টেম নিশ্চিত করবে,” বলেন এফআইএল ইন্ডাস্ট্রিজের গ্রুপ এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর সৈয়দ জুনাইদ আলতাফ।

পরিবেশবান্ধব ও অর্থনৈতিক সুবিধা
বছরব্যাপী চলাচলক্ষম এই রোপওয়ে জলরোধী, বিদ্যুৎচালিত গন্ডোলা দিয়ে সজ্জিত, যা যানবাহনের তুলনায় কার্বন নিঃসরণ কমাবে। প্রতিটি ১০ আসনের কেবিনে স্বয়ংক্রিয় দরজা, পর্যাপ্ত বায়ুচলাচল এবং ইউরোপীয় নিরাপত্তা মান থাকবে। প্রতি ঘণ্টায় ১,৩০০ যাত্রী পরিবহনের ক্ষমতা সম্পন্ন এই প্রকল্প ট্রাফিক জটিলতা কমাবে এবং পর্যটন মৌসুমে স্থানীয়দের জন্য সুবিধা বাড়াবে। স্থানীয় উৎপাদন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে এবং উত্তরাখণ্ডের জিডিপিতে অবদান রাখবে। “এটি শুধু পর্যটন নয়, স্থানীয় অর্থনীতি ও টেকসই উন্নয়নের জন্যও গেম-চেঞ্জার,” বলেন এফআইএল-এর গ্রুপ ডিরেক্টর ওয়াইস আলতাফ সৈয়দ।

টেকসই পর্যটনের নতুন দিগন্ত
ইন্টারঅ্যালপিন ২০২৫-এ অস্ট্রিয়ার ইন্সব্রুকে প্রকল্পটি উন্মোচিত হয়েছে, যা এর আন্তর্জাতিক গুরুত্ব তুলে ধরে। দেরাদুনের পুরকুল গ্রাম থেকে মুসৌরির গান্ধী চৌকে এই রোপওয়ে সংযোগ স্থাপন করবে। ২,০০০ গাড়ির জন্য পার্কিং, ক্যাফে এবং আধুনিক সুবিধা সহ এটি পর্যটকদের অভিজ্ঞতা উন্নত করবে। মুসৌরি স্কাই কার কো ম্পা নি যমুনোত্রী রোপওয়ে প্রকল্পও হাতে নিয়েছে, যা তীর্থস্থানে প্রবেশাধিকার বাড়াবে। এই উদ্যোগ উত্তরাখণ্ডের টেকসই পর্যটন ও অবকাঠামোর প্রতি প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত করে।