অপারেশন সিন্দুরের উত্তেজনায় শাড়ি-টি-শার্টের চাহিদা তুঙ্গে, বিতর্কও উঠছে সমান্তরাল

৭ মে, ২০২৫-এ শুরু হওয়া ‘অপারেশন সিন্দুর’ ভারতের সামরিক শক্তি ও দেশভ syতার পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে ১০০-র বেশি আতঙ্কবাদী নিহত করার পর ১০ মে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হয়। কিন্তু এই অভিযানের প্রভাব এখন বাজারে ফ্যাশন ও বাণিজ্যের নতুন রূপ নিয়েছে। এয়ার মার্শাল এ.কে. ভারতীর ভাইরাল স্লোগান, “আমাদের কাজ নিশানা সাধানা, লাশ গোনা নয়” এবং “কিরানা পাহাড়ে কী আছে, আমি জানি না,” টি-শার্ট, টোট ব্যাগ এবং এমনকি শাড়িতে ছাপা হয়ে বাজারে ঝড় তুলছে। দেশভক্তির এই উন্মাদনা পোশাক থেকে সিন্দুর পাউডারের চাহিদা বাড়িয়ে তুলেছে, তবে এর সঙ্গে উঠেছে বাণিজ্যিকীকরণ নিয়ে বিতর্ক।
কর্ণাটকের বেলগাভির হ্যান্ডলুম শাড়ি বিক্রেতা প্রসাদ নারায়ণ কামকার এই সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন। তাঁর লাল ও মেরুন রঙের শাড়ি এখন ‘সিন্দুর শাড়ি’ নামে বিক্রি হচ্ছে। কামকার বলেন, “সিন্দুর শাড়ির চাহিদা এতটাই বেড়েছে যে আমরা চেক প্যাটার্নের নতুন ডিজাইন তৈরি শুরু করেছি।” কলকাতার বাণিজ্যিক পাইলট ও এয়ারো আর্মার ব্র্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা অনীশ আগরওয়াল অপারেশন সিন্দুর থেকে প্রেরণা নিয়ে টি-শার্ট কালেকশন লঞ্চ করেছেন, যেখানে অভিযানের স্থানগুলোর মানচিত্র ছাপা হয়েছে। এয়ারো আর্মার এর আগে কার্গিল ও মেঘদূতের মতো অভিযানের উপর ভিত্তি করে পণ্য বাজারে এনেছে। ভুবনেশ্বরে সিন্দুর পাউডারের বিক্রিও বেড়েছে, যা স্থানীয় বাজারে নতুন প্রাণ সঞ্চার করেছে।
তবে, এই জনপ্রিয়তার মাঝে বিতর্কও উঠেছে। ‘অপারেশন সিন্দুর’ নামে ট্রেডমার্ক নিবন্ধনের বিরুদ্ধে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। বিজ্ঞাপন গুরু পীযূষ পাণ্ডে বলেন, “এই ধরনের সামরিক অভিযানকে ব্র্যান্ডিংয়ে রূপান্তর করা সংবেদনশীলতার অভাব বোঝায়। আমরা সাফল্য পেলেও, আমাদের জওয়ানদের হারিয়েছি। এটাকে শুধু ব্যবসায় পরিণত করা উচিত নয়।” এক্স-এ একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, “দেশভক্তি ফ্যাশনে প্রকাশ করা গর্বের, কিন্তু এটাকে ব্যবসায় রূপান্তরিত করা কি ঠিক?” দেশভক্তির এই উৎসাহ পোশাক ও বাজারে নতুন রঙ যোগ করলেও, এর নৈতিক দিক নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।