স্মার্টফোন ব্যবহারে ভারত আমেরিকার থেকে এগিয়ে, ৪০ কোটির ফারাক!

আজকের যুগে স্মার্টফোন প্রতিটি মানুষের জীবনের অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে। পড়াশোনা, কাজ, বিনোদন—সব কিছুর জন্য স্মার্টফোন অত্যাবশ্যক। প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে স্মার্টফোনের ব্যবহারও দ্রুত বাড়ছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, ২০২৫ সালে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের সংখ্যায় কোন দেশগুলো শীর্ষে রয়েছে এবং ভারত কীভাবে আমেরিকাকে ছাড়িয়ে গেছে।
চিন বিশ্ব নেতা
চিন স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের সংখ্যায় বিশ্বে প্রথম স্থানে রয়েছে। বিশাল জনসংখ্যা এবং প্রযুক্তির দ্রুত গ্রহণের কারণে চিনে ১০০ কোটির (১ বিলিয়ন) বেশি মানুষ স্মার্টফোন ব্যবহার করে। ২০২৩ সালে চিনে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল প্রায় ১.০৪ বিলিয়ন, যা জনসংখ্যার ৭২%। ২০২৮ সালের মধ্যে এটি ৮৩%-এর বেশি হবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। গ্রাম থেকে শহর, সর্বত্র স্মার্টফোনের ব্যাপক প্রচলন রয়েছে।
ভারত আমেরিকাকে ছাড়িয়ে দ্বিতীয়
ভারত স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের সংখ্যায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে, আমেরিকাকে পিছনে ফেলে। ২০২৫ সালে ভারতে প্রায় ৭০ কোটি (৭০০ মিলিয়ন) স্মার্টফোন ব্যবহারকারী রয়েছে, যা আমেরিকার তুলনায় ৪০ কোটি বেশি। সাশ্রয়ী ইন্টারনেট, কম দামের স্মার্টফোন, এবং ব্যাপক নেটওয়ার্ক সংযোগ এর প্রধান কারণ। বিশেষত তরুণ প্রজন্মের মধ্যে স্মার্টফোনের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। সোশ্যাল মিডিয়া, অনলাইন ক্লাস, এবং ডিজিটাল পেমেন্টের জনপ্রিয়তা এটিকে আরও উৎসাহিত করেছে। ২০২৩ সালে ভারতে ১ বিলিয়নের বেশি স্মার্টফোন ব্যবহারকারী ছিল বলে অনুমান করা হয়েছিল, এবং ২০৪০ সালের মধ্যে এটি ১.৫৫ বিলিয়নে পৌঁছবে। ভারতের স্মার্টফোন পেনিট্রেশন রেট ২০২৪ সালে ৭% ছিল, যা ২০২৯ সালে ৮.৩%-এ পৌঁছবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আমেরিকা তৃতীয়, উচ্চ পেনিট্রেশন রেট
আমেরিকা স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের সংখ্যায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে, যেখানে ৩০ কোটির (৩০০ মিলিয়ন) বেশি মানুষ স্মার্টফোন ব্যবহার করে। আমেরিকার জনসংখ্যা ভারত ও চিনের তুলনায় অনেক কম, কিন্তু প্রযুক্তির সহজলভ্যতা এবং উচ্চ পেনিট্রেশন রেট (২০২৩ সালে ৮১.৬%) এটিকে এই তালিকায় রেখেছে। আমেরিকায় প্রায় প্রত্যেকেই স্মার্টফোন ব্যবহার করে কাজ, ইমেল, অনলাইন শপিং, এবং বিনোদনের জন্য। ২০২৪ সালে আমেরিকায় ৯৭% প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে সেলফোন ছিল, এবং ৯০% স্মার্টফোন ব্যবহারকারী।
ভারত-আমেরিকার ৪০ কোটির ফারাক
ভারত ও আমেরিকার মধ্যে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের সংখ্যায় ৪০ কোটির (৪০০ মিলিয়ন) ফারাক রয়েছে। ভারতের বিশাল জনসংখ্যা এবং ক্রমবর্ধমান ডিজিটাল অবকাঠামো এই ফারাকের প্রধান কারণ। তবে, আমেরিকার উচ্চ পেনিট্রেশন রেট ইঙ্গিত দেয় যে সেখানে প্রায় সকলেই স্মার্টফোন ব্যবহার করে। এক্স-এ @Sa_na_taniD_
পোস্ট করেছেন, ভারতের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা এবং বাজার অ্যাপলের মতো কো ম্পা নির জন্য বড় সুযোগ তৈরি করেছে।
অন্যান্য দেশ
চিন, ভারত, এবং আমেরিকার পর ইন্দোনেশিয়া, ব্রাজিল, রাশিয়া, এবং জাপানের মতো দেশগুলোও স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের সংখ্যায় এগিয়ে রয়েছে। তবে, চিন ও ভারতের বিশাল বাজারের সঙ্গে পাল্লা দেওয়া তাদের পক্ষে কঠিন। ভারতের স্মার্টফোন বাজার ২০২৫ সালে ৬.৮৭% হারে বৃদ্ধি পাবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, যা ২০২৯ সালে ৬২.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছবে।
উপসংহার
স্মার্টফোন ব্যবহারে চিন শীর্ষে, ভারত দ্বিতীয়, এবং আমেরিকা তৃতীয়। ভারতের ৭০০ মিলিয়ন ব্যবহারকারী আমেরিকার ৩০০ মিলিয়নের তুলনায় ৪০০ মিলিয়ন বেশি, যা ভারতের বিশাল জনসংখ্যা এবং ডিজিটাল বিপ্লবের ফল। সাশ্রয়ী ফোন, সস্তা ইন্টরনেট, এবং সরকারের ডিজিটাল ইন্ডিয়া উদ্যোগ ভারতের এই অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করেছে। তবে, আমেরিকার উচ্চ পেনিট্রেশন রেট প্রযুক্তির গভীর প্রবেশকে নির্দেশ করে। এক্স-এ ব্যবহারকারীরা ভারতের এই সাফল্যকে ‘ডিজিটাল রেভল্যুশন’ হিসেবে উদযাপন করছেন।