পাকিস্তানের জন্য গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে জ্যোতি মলহোত্রা গ্রেপ্তার, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল সতর্কতা

পাকিস্তানের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেপ্তার হরিয়ানার ট্র্যাভেল ভ্লগার জ্যোতি মলহোত্রার মামলায় নতুন তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। জানা গেছে, তাঁর গ্রেপ্তারের অনেক আগেই একজন ব্যক্তি তাঁর সন্দেহজনক কার্যকলাপ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে সতর্ক করেছিলেন। এই ঘটনা এখন প্রশ্ন তুলছে—আদৌ কি এই সতর্কতা উপেক্ষিত হয়েছিল?
‘ট্র্যাভেল উইথ জো’ নামে ইউটিউব চ্যানেলের জন্য পরিচিত জ্যোতি, যার প্রায় ৪ লাখ সাবস্ক্রাইবার, এখন উত্তর ভারতে সক্রিয় একটি পাকিস্তানি গুপ্তচর নেটওয়ার্কের তদন্তে প্রধান সন্দেহভাজন। হিসারের বাসিন্দা জ্যোতিকে সম্প্রতি পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সংবেদনশীল ভারতীয় সামরিক তথ্য শেয়ার করার অভিযোগে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাঁর গ্রেপ্তারি জম্মু-কাশ্মীরের পাহলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে যুক্ত, যেখানে ২৬ জন নিহত হয়েছিলেন, যাদের বেশিরভাগই ছিলেন পর্যটক।
২০২৪ সালের ১০ মে একজন ভারতীয় সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী কপিল জৈন এক্স প্ল্যাটফর্মে জ্যোতির কার্যকলাপ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ)-কে ট্যাগ করে জ্যোতির উপর নজরদারির অনুরোধ জানান। পোস্টে বলা হয়, “এনআইএ, অনুগ্রহ করে এই মহিলার উপর কড়া নজর রাখুন। তিনি প্রথমে পাকিস্তানি দূতাবাসের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন, তারপর ১০ দিনের জন্য পাকিস্তানে গিয়েছিলেন। এখন তিনি কাশ্মীরে যাচ্ছেন… এসবের পিছনে কোনো যোগসূত্র থাকতে পারে।” জ্যোতির গ্রেপ্তারির পর এই পোস্টটি আবারও ভাইরাল হয়েছে।
তদন্তে জানা গেছে, জ্যোতি ২০২৩ সালে দু’বার পাকিস্তান সফর করেছিলেন, যেখানে তিনি দিল্লির পাকিস্তান হাই কমিশনের কর্মী এহসান-উর-রহিম ওরফে দানিশ-এর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। দানিশকে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে সম্প্রতি ভারত থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আরেকজন ব্যক্তি, আলি আহওয়ান, জ্যোতির থাকার ব্যবস্থা করেছিলেন এবং তাঁকে শাকির ও রানা শাহবাজ নামে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংযোগের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। জ্যোতি শাহবাজের নম্বর ‘জট রান্ধাওয়া’ নামে সেভ করেছিলেন যাতে কারও সন্দেহ না হয়।
জ্যোতির ইউটিউব এবং ইনস্টাগ্রামে লাখ লাখ ফলোয়ার রয়েছে, এবং তিনি একজন ট্র্যাভেল ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে পরিচিত। তবে তাঁর গুপ্তচরবৃত্তি এবং সন্দেহজনক কার্যকলাপ নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর উদ্বেগ বাড়িয়েছে। তদন্তকারীরা এখন জ্যোতির বিস্তৃত গুপ্তচর নেটওয়ার্ক উদঘাটনের চেষ্টা করছেন। হিসার পুলিশ তাঁর ল্যাপটপ এবং মোবাইল ফোন জব্দ করেছে, যার ফরেনসিক তদন্তে পাকিস্তানে তথ্য প্রেরণের প্রমাণ পাওয়া গেছে।