আকাশ আনন্দের বাসপায় ফিরে এল ক্ষমতা, তবে কি নরম হবে রাজনৈতিক তেজ?

বহুজন সমাজ পার্টির (বাসপা) প্রধান মায়াবতী তাঁর ভাইপো আকাশ আনন্দকে আবারও দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিয়ে রাজনৈতিক মঞ্চে ফিরিয়ে এনেছেন। রবিবার (১৮ মে, ২০২৫) দিল্লিতে অনুষ্ঠিত বাসপার বৈঠকে আকাশ আনন্দকে প্রধান জাতীয় সমন্বয়ক নিযুক্ত করা হয়। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে মায়াবতী আকাশকে দলের দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন, তবে তাঁর রাজনৈতিক তেজ আগের মতো আক্রমণাত্মক হবে না বলে মনে করা হচ্ছে। আকাশের ক্ষমতা বাড়লেও তাঁর রাজনৈতিক শৈলী নরম থাকতে পারে। এই প্রত্যাবর্তনের পেছনে আকাশের তৃতীয়বার দলে ফেরা এবং বাসপার ভবিষ্যৎ নিয়ে মায়াবতীর কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি কাজ করছে।
দুই মাস আগে মায়াবতী আকাশ আনন্দকে তাঁর শ্বশুর অশোক সিদ্ধার্থের প্রভাবের কারণে জাতীয় সমন্বয়ক পদ থেকে বরখাস্ত করে দল থেকে বহিষ্কার করেছিলেন। এমনকি তাঁকে রাজনৈতিক উত্তরাধিকারী পদ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আম্বেদকর জয়ন্তীর একদিন আগে আকাশ সোশ্যাল মিডিয়ায় মায়াবতীর কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে দলে ফেরার আবেদন করেন। এরপরই তাঁকে দলে ফিরিয়ে নেওয়া হয় এবং এখন প্রধান জাতীয় সমন্বয়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বাসপার তিন জাতীয় সমন্বয়ক—রামজি গৌতম, রাজারাম এবং রণধীর বেনিওয়াল—এখন আকাশ আনন্দের অধীনে কাজ করবেন। মায়াবতী নিজে উত্তরপ্রদেশের দায়িত্ব সামলাবেন, তবে অন্যান্য রাজ্যে আকাশ প্রতি মাসে অন্তত একদিন উপস্থিত থেকে সংগঠনের মূল্যায়ন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন। মায়াবতী বলেছেন, “আকাশকে সমর্থন করুন, তাঁর ভুল হলে ব্যক্তিগতভাবে জানান।”
আকাশ আনন্দের রাজনৈতিক তেজ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য মায়াবতী সতর্ক রয়েছেন। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে আকাশ আক্রমণাত্মক ভাষণ দিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ চালিয়েছিলেন। সীতাপুরের এক সমাবেশে তিনি যোগী সরকারকে ‘তালিবান’ এবং ‘আতঙ্কবাদীদের সরকার’ বলে সমালোচনা করেন, যার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের মামলা দায়ের হয়। এই ঘটনার পর মায়াবতী তাঁকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেন। বাসপা সূত্রে জানা গেছে, মায়াবতী এখন আকাশকে তাঁর সান্নিধ্যে রেখে রাজনৈতিক পরিপক্কতা অর্জনের সুযোগ দেবেন। আকাশও আক্রমণাত্মক ভাষণের পরিবর্তে নরম ও কৌশলগত পন্থা অবলম্বন করবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
আকাশ আনন্দের আসল পরীক্ষা হবে বাংলার আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে। বাসপা সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে তারা বাংলায় একা নির্বাচনে লড়বে। রাজস্থান, হরিয়ানা এবং দিল্লিতে আকাশ দলকে শক্তিশালী করতে ব্যর্থ হয়েছেন। ২০২০ সালে বাংলায় বাসপা একটি আসন জিতেছিল। এবার আকাশের নেতৃত্বে দলের পারফরম্যান্স উন্নত হলে উত্তরপ্রদেশের ২০২৭ নির্বাচনের আগে নতুন আশা জাগবে। অন্যথায়, বাসপার রাজনৈতিক পথ আরও কঠিন হয়ে উঠতে পারে।