‘ভারত কোনো ধর্মশালা নয়’—শরণার্থী যাচিকায় সুপ্রিম কোর্টের কড়া মন্তব্য

নয়াদিল্লি, ১৯ মে ২০২৫: সুপ্রিম কোর্ট সোমবার এক শ্রীলঙ্কান নাগরিকের শরণার্থী যাচিকা খারিজ করে কড়া মন্তব্য করেছে, “ভারত কোনো ধর্মশালা নয়, যেখানে বিশ্বের সব শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়া যায়।” বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত এবং বিচারপতি কে. বিনোদ চন্দ্রনের বেঞ্চ এই মামলার শুনানিতে বলেন, “১৪০ কোটি জনসংখ্যার দেশে আমরা ইতিমধ্যেই চ্যালেঞ্জের মুখে। কেন আমরা সব দেশ থেকে শরণার্থীদের স্বাগত জানাব?” যাচিকাকারী, একজন শ্রীলঙ্কান তামিল, ভিসা নিয়ে ভারতে এসেছিলেন এবং বর্তমানে অবৈধ কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইন (UAPA)-এর অধীনে তিন বছর ধরে হেফাজতে রয়েছেন।
যাচিকাকারীর আইনজীবী জানান, শ্রীলঙ্কায় তাঁর প্রাণ সংশয় রয়েছে। তিনি ভারতে তাঁর স্ত্রী ও সন্তানদের সঙ্গে বসবাস করছেন। ২০১৫ সালে তাঁকে লিবারেশন টাইগার্স অফ তামিল ঈলম (LTTE)-এর সঙ্গে সংযোগের সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ২০১৮ সালে একটি ট্রায়াল কোর্ট তাঁকে UAPA-এর অধীনে দোষী সাব্যস্ত করে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়। ২০২২ সালে মাদ্রাস হাইকোর্ট সাজা কমিয়ে সাত বছর করে এবং সাজা শেষে দেশ ত্যাগের নির্দেশ দেয়। আইনজীবী সংবিধানের ২১ ও ১৯ অনুচ্ছেদের উল্লেখ করলেও, কোর্ট স্পষ্ট করে, “১৯ নম্বর অনুচ্ছেদ শুধু ভারতীয় নাগরিকদের জন্য, বিদেশিরা এর আওতায় পড়ে না।”
কোর্ট যাচিকাকারীকে পরামর্শ দেয়, তিনি অন্য কোনো দেশে শরণ নেওয়ার চেষ্টা করুন। বিচারপতি দত্ত জানান, ভারতের জনসংখ্যার চাপ এবং সীমিত সংস্থানের মধ্যে শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়া সম্ভব নয়। “তিনি কোন অধিকারে ভারতে থাকবেন?”—এই প্রশ্ন তুলে কোর্ট যাচিকা খারিজ করে। আইনজীবী জানান, তাঁর মক্কেলের নির্বাসন প্রক্রিয়া এখনো শুরু হয়নি, তবে কোর্ট এই বিষয়ে কোনো নির্দেশ দেয়নি। এই রায় শরণার্থী নীতি নিয়ে ভারতের কঠোর অবস্থানকে আরও স্পষ্ট করেছে। ভক্তরা সোশ্যাল মিডিয়ায় এই রায় নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন, কেউ সমর্থন করছেন, কেউ মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে প্রশ্ন তুলছেন।