মধ্যপ্রদেশের এই হনুমান মন্দিরে বুটি চিবিয়েই জোড়া লাগে ভাঙা হাড়!

মধ্যপ্রদেশের কাটনি জেলার মুহাসা গ্রামে, জেলা সদর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সংকটমোচন হনুমান মন্দির ভাঙা হাড় জোড়ার জন্য দেশজুড়ে বিখ্যাত। এই মন্দিরে মঙ্গলবার ও শনিবার ভক্তদের ভিড় লেগে থাকে। মান্যতা রয়েছে যে, এখানকার পণ্ডিত সরমন পটেলের দেওয়া বিশেষ জড়িবুটি চিবিয়ে খেলে ভাঙা হাড় জোড়া লাগে। এমনকি যেসব রোগীদের ডাক্তাররা প্লাস্টার বা অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দিয়েছেন, তারাও এখানে এসে এই বুটি খেয়ে সুস্থ হয়েছেন বলে দাবি করেন। আশ্চর্যজনকভাবে, এই বুটি কেবল মানুষেরই নয়, পশুদের ভাঙা হাড় জোড়াতেও কার্যকর।
মন্দিরে প্রতিদিন শত শত রোগী আসেন, তবে মঙ্গলবার ও শনিবার ভিড় এতটাই বাড়ে যে পা রাখার জায়গা থাকে না। অনেকে স্ট্রেচারে বা অ্যাম্বুলেন্সে করে ভাঙা হাড় নিয়ে ‘ডাক্তার হনুমান’-এর কাছে চিকিৎসার জন্য আসেন। স্থানীয় বাসিন্দা মদন দুবে বলেন, “যারা ডাক্তারের কাছে নিরাশ হয়ে ফিরেছেন, তারাও এখানে এসে সুস্থ হয়েছেন।” উত্তরপ্রদেশের শ্যাম যাদব জানান, “একটি দুর্ঘটনায় আমার পায়ের হাড় ভেঙে গিয়েছিল। ঝাঁসির ডাক্তার অপারেশনের পরামর্শ দিয়েছিলেন, কিন্তু এখানে বুটি খাওয়ার পর আমি অনেক আরাম পেয়েছি।”
এই মন্দিরের ইতিহাসও রহস্যময়। প্রায় ৪০ বছর আগে পণ্ডিত সরমন পটেলের পিতা আধারী লাল পটেলকে এক সাধু এই জড়িবুটি দিয়ে জনকল্যাণের পরামর্শ দেন। তিনি প্রথমে এটি তাদের গরুর ভাঙা হাড়ে ব্যবহার করেন এবং সফল হন। এরপর থেকে তিনি মন্দিরের চত্বরে বসে ভক্তদের বুটি দিতে শুরু করেন। সরমন পটেল বলেন, “এই বুটি হনুমানজির আশীর্বাদে কাজ করে। এটি মন্দিরে খেলেই ফল দেয়।” ভক্তদের প্রথমে রাম নাম জপ করতে বলা হয়, তারপর চোখ বন্ধ করে বুটি চিবিয়ে খেতে হয়। দিল্লির একটি গবেষণা দল এই বুটির পরীক্ষা করে জানায়, এতে কোনো বিশেষ উপাদান নেই, তবু ভক্তরা এর ফলে সুস্থ হন।
এই মন্দিরে চিকিৎসার জন্য কোনো ফি নেওয়া হয় না; ভক্তরা ইচ্ছানুযায়ী দান দেন। মন্দিরের বাইরে হাড়ের ব্যথার জন্য তেলও বিক্রি হয়। বিজ্ঞান এই ঘটনাকে ব্যাখ্যা করতে পারেনি, তবে ভক্তদের অটল বিশ্বাস এই মন্দিরকে ‘অর্থোপেডিক হনুমান মন্দির’ হিসেবে বিখ্যাত করেছে।