চালের দাম নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য, জাপানের কৃষিমন্ত্রী তাকু ইটোর পদত্যাগ

জাপানে চাল জাতীয় খাদ্য এবং সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। ভারতের বাংলা বা বিহারের মতো জাপানেও চালের চাহিদা প্রচুর। কিন্তু বর্তমানে চালের দাম আকাশছোঁয়া এবং সরবরাহে ঘাটতির কারণে জনগণের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এই সংকটের মধ্যে কৃষিমন্ত্রী তাকু ইটোর একটি বিতর্কিত মন্তব্য জনরোষের আগুন জ্বালিয়ে দেয়, যার জেরে তাঁকে পদত্যাগ করতে হয়।
রবিবার সাগা প্রদেশে একটি সেমিনারে ইটো বলেন, “আমি নিজে কখনো চাল কিনিনি। আমার সমর্থকরা আমাকে এত চাল উপহার দেন যে আমি সেগুলো বিক্রি করতে পারি।” এই মন্তব্য চালের উচ্চমূল্যে কষ্ট পাওয়া জনগণের কাছে অসংবেদনশীল বলে বিবেচিত হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভের ঝড় ওঠে এবং বিরোধী দলগুলো ইটোর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার হুমকি দেয়। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা এই মন্তব্যকে “অত্যন্ত আপত্তিকর” বলে সমালোচনা করেন এবং ইটোকে ক্ষমা চাইতে ও দাম স্থিতিশীল করার পদক্ষেপ নিতে বলেন।
বুধবার ইটো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ইস্তফা জমা দেন, যা ইশিবা গ্রহণ করেন। তিনি বলেন, “চালের দামের সংকটে জনগণের দুর্ভোগের সময় আমার মন্তব্য অত্যন্ত অনুচিত ছিল। এই পরিস্থিতিতে আমার পদে থাকা উপযুক্ত নয়।” তিনি স্পষ্ট করেন, তিনি নিজে সাদা চাল কেনেন এবং উপহারের কথাটি বাদামী চালের জন্য বলা হয়েছিল। জাপানের কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ১১ মে পর্যন্ত ৫ কেজি চালের দাম গড়ে ৪,২৬৮ ইয়েন (২৯.৫ ডলার), যা গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ এবং গত সপ্তাহের তুলনায় ৫৪ ইয়েন বেশি।
সরকার জরুরি ভাণ্ডার থেকে চাল ছাড়লেও দাম ও সরবরাহ সংকট কমেনি। ইটোর উত্তরসূরি হিসেবে সাবেক পরিবেশমন্ত্রী শিনজিরো কোইজুমির নাম উঠে এসেছে। ইশিবা খাদ্য নিরাপত্তা ও স্বনির্ভরতা জোরদার করতে কৃষি সংস্কার এবং রপ্তানি বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছেন, যদিও সমালোচকরা বলছেন, চালের সংকট সমাধানই এখন জরুরি।