ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনায় ভারতে মূল্যস্ফীতির আশঙ্কা, তেলের দামে উত্থান

ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনায় ভারতে মূল্যস্ফীতির আশঙ্কা, তেলের দামে উত্থান

ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে ক্রুড অয়েলের দামে আবারও উত্থান দেখা গেছে। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলির ইঙ্গিত অনুযায়ী, ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক ঘাঁটিতে সম্ভাব্য সামরিক হামলার পরিকল্পনা করছে। এই খবর প্রকাশের পর ব্রেন্ট ক্রুড এবং ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম ১.০৬% বেড়ে প্রতি ব্যারেল ৬৬.০৭ ডলারে পৌঁছেছে। বিশ্লেষকদের মতে, পশ্চিম এশিয়ায় বড় ধরনের সামরিক সংঘাত হলে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি সরবরাহ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হতে পারে। ভারতের মতো দেশ, যারা তাদের ৮৫% এর বেশি তেল আমদানি করে, তাদের জন্য এই পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
ভারত বিশ্বের বৃহত্তম তেল আমদানিকারক দেশগুলির মধ্যে অন্যতম। ২০২৫ অর্থবছরে ভারত ১৩৭ বিলিয়ন ডলার মূল্যের ২৩৪.৩ মিলিয়ন টন ক্রুড অয়েল আমদানি করেছে, যা গত বছরের ১৩৩.৪ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় ৩.৪% বৃদ্ধি পেয়েছে। তেলের দামে সামান্য বৃদ্ধিও ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি, বাজেট ভারসাম্য এবং মূল্যস্ফীতির হারে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। পেট্রোল ও ডিজেলের দাম বৃদ্ধি পরিবহন খরচ বাড়াবে, যা প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার উপর চাপ সৃষ্টি করবে।
আমেরিকা ও ইরানের মধ্যে পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে অনিশ্চয়তাও তেলের দাম বৃদ্ধির একটি বড় কারণ। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি আমেরিকার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধের দাবিকে “অতিরঞ্জিত” বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন, যা চুক্তির সম্ভাবনাকে দুর্বল করেছে। ইসরায়েল যদি ইরানের উপর হামলা চালায়, তবে পশ্চিম এশিয়ায় বড় ধরনের সংকট সৃষ্টি হতে পারে, যা বিশ্বব্যাপী তেল সরবরাহ এবং দামের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে। ভারতের জন্য এটি বাজেট, মুদ্রা এবং মূল্যস্ফীতির ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসতে পারে। সরকারকে এখন থেকেই বিকল্প কৌশল নিয়ে ভাবতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে সম্ভাব্য সরবরাহ বিঘ্ন বা দাম বৃদ্ধির মোকাবিলা করা যায়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *