নেদারল্যান্ডসের অস্ত্র চুক্তি, পাকিস্তানের পাশে শান্তিপ্রিয় দেশ?

বিশ্ব যখন সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের ডাক দিচ্ছে, তখন পাকিস্তানের সামরিক শক্তি বৃদ্ধিতে অপ্রত্যাশিত একটি নাম উঠে এসেছে—নেদারল্যান্ডস। চীন ও তুরস্কের মতো দেশের পাশাপাশি এই শান্তিপ্রিয় ইউরোপীয় দেশটি এখন পাকিস্তানের দ্বিতীয় বৃহত্তম অস্ত্র সরবরাহকারী। সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তান তার ৫.৫% অস্ত্র নেদারল্যান্ডস থেকে আমদানি করে, যার মধ্যে রয়েছে নৌবাহিনীর জন্য খনি শিকারী ও টহল জাহাজ। এই জাহাজগুলি সমুদ্রে নিরাপত্তা ও খনি সনাক্তকরণে ব্যবহৃত হয়। ১৯৯০ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান নেদারল্যান্ডসের কাছ থেকে এই ধরনের সরঞ্জাম ক্রয় করে আসছে। ভারতের জন্য এটি একটি নতুন কৌশলগত চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে, কারণ নেদারল্যান্ডসের এই পদক্ষেপ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তাদের ঘোষিত অবস্থানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস. জয়শঙ্করের সাম্প্রতিক ইউরোপ সফর এই প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী ডিক শোফের সাথে বৈঠকে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সংহতির বার্তা দিয়েছেন এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শুভেচ্ছা পৌঁছে দিয়েছেন। তবে, নেদারল্যান্ডসের অস্ত্র সরবরাহের বিষয়টি ভারতের কূটনৈতিক আলোচনায় ছায়া ফেলেছে। ভারত ও নেদারল্যান্ডসের মধ্যে ২২ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য সম্পর্ক রয়েছে, যেখানে পাকিস্তানের সঙ্গে ইউরোপের বাণিজ্য মাত্র ১৫ বিলিয়ন ডলার। এই অর্থনৈতিক শক্তির সুবাদে ভারত নেদারল্যান্ডসকে বোঝাতে চায় যে পাকিস্তানকে অস্ত্র সরবরাহ বিশ্ব মঞ্চে তাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে পারে। অপারেশন সিন্দুরের সাফল্যের পর ভারত এখন বিশ্বব্যাপী পাকিস্তানের দ্বৈত চরিত্র উন্মোচনের জন্য কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করছে, যার মধ্যে ৩২টি দেশে ৭টি রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে সফর পরিকল্পনা রয়েছে।