ক্যান্সার চিকিৎসা: ১১ হাজার টাকায় ক্যান্সার চিকিৎসা? বিশ্ব হতবাক

ক্যান্সার নিরাময় চীন: চিকিৎসা বিজ্ঞানে নতুন আশার সঞ্চার করেছেন চীনা বিজ্ঞানীরা। এতদিন পর্যন্ত ক্যান্সারের মতো মারাত্মক রোগের চিকিৎসা অনেক মানুষের নাগালের বাইরে ছিল। কিন্তু এখন মাত্র ১১ হাজার টাকায় ক্যান্সারের চিকিৎসার সম্ভাবনা রয়েছে।
চীনে বিকশিত ‘অনকোলাইটিক ভাইরাস থেরাপি’ চিকিৎসা জগতে এক নতুন যুগের সূচনা করেছে।
এই অনকোলাইটিক ভাইরাস থেরাপি কী?
এই থেরাপিতে, বিশেষভাবে পরিবর্তিত ভাইরাস ব্যবহার করা হয়, যা ক্যান্সার কোষে প্রবেশ করে এবং তাদের ধ্বংস করে। এই ভাইরাসগুলি কেবল টিউমার ধ্বংস করে না বরং শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে সক্রিয় করে তোলে যাতে অবশিষ্ট ক্যান্সার কোষগুলিকে মেরে ফেলা যায়। অনকোলাইটিক থেরাপির উপর গবেষণা নতুন নয়। এই বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হয়েছিল ১০০ বছর আগে। তবে, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অগ্রগতি এখন এই থেরাপির কার্যকারিতা অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে।
এই থেরাপি আশ্চর্যজনক ফলাফল দিচ্ছে।
২০২৫ সালের জানুয়ারিতে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে জরায়ুমুখের ক্যান্সারে আক্রান্ত একজন রোগী অনকোলাইটিক ভাইরাস থেরাপি গ্রহণের পর তার মেটাস্ট্যাটিক টিউমার সম্পূর্ণরূপে অদৃশ্য হয়ে যায়। চিকিৎসার পর রোগী ৩৬ মাস সুস্থ ছিলেন। দক্ষিণ চীনের গুয়াংজি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ঝাও ইয়ংজিয়াং-এর নেতৃত্বে এই গবেষণাটি করা হয়েছে। গবেষণায় ব্যবহৃত ভাইরাসটি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ক্যান্সার কোষগুলিকে ‘বিদেশী বস্তু’ হিসেবে চিনতে পারে এবং তাদের ধ্বংস করতে পারে।
কেন এটি এত আলোচনার বিষয়?
সাধারণত, CAR-T থেরাপির মতো উন্নত ক্যান্সার চিকিৎসার খরচ প্রায় ১.১৬ কোটি টাকা। তুলনামূলকভাবে, অনকোলিটিক থেরাপির একক ডোজের দাম মাত্র ১১,০০০ টাকা এবং এক বছরের চিকিৎসার খরচ সর্বোচ্চ ৩.৩ লক্ষ টাকা হতে পারে। যদি এত কম খরচে ক্যান্সারের চিকিৎসা সম্ভব হয়, তাহলে লক্ষ লক্ষ রোগীর জন্য এটি আশীর্বাদস্বরূপ প্রমাণিত হতে পারে।
ভবিষ্যৎ কী বলে?
বর্তমানে চীনে এই থেরাপির প্রায় ৬০টি ক্লিনিকাল ট্রায়াল চলছে। বিজ্ঞানীরা আশা করছেন যে খুব শীঘ্রই এটি বিশ্বব্যাপী একটি কার্যকর এবং সাশ্রয়ী মূল্যের চিকিৎসা পদ্ধতি হিসেবে স্বীকৃত হবে। যদি এই প্রযুক্তি ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশে ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে ক্যান্সার চিকিৎসায় বিপ্লব আনতে পারে।