সিকিমে শহিদ শশাঙ্ক তিওয়ারি, অযোধ্যার লালের বীরত্বে গর্বিত গ্রাম

উত্তর প্রদেশের অযোধ্যার মাঝওয়ান গদ্দোপুরের বাসিন্দা ২৩ বছর বয়সী লেফটেন্যান্ট শশাঙ্ক তিওয়ারি সিকিমে এক অপারেশনাল টহলের সময় সঙ্গী সৈনিককে বাঁচাতে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। উচ্চ-উচ্চতাযুক্ত উত্তর সিকিমের কঠিন ভূখণ্ডে টহলের সময় তাঁর এক সঙ্গী দ্রুতগামী নদীর স্রোতে পড়ে যান। শশাঙ্ক নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদীতে ঝাঁপ দেন এবং সঙ্গীকে মৃত্যুর মুখ থেকে উদ্ধার করেন, কিন্তু নিজে স্রোতে ভেসে যান। তাঁর এই বীরত্ব ভারতীয় সেনাবাহিনীর সংহতি ও নিঃস্বার্থতার মূল্যবোধের প্রকৃষ্ট উদাহরণ। শশাঙ্কের পার্থিব দেহ আজ, ২৩ মে, বিমানযোগে অযোধ্যায় পৌঁছাবে এবং ২৪ মে মাঝা জমথরা শ্মশান ঘাটে রাষ্ট্রীয় সম্মানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
শশাঙ্কের পিতা জং বাহাদুর তিওয়ারি মার্চেন্ট নেভিতে অফিসার হিসেবে আমেরিকায় কর্মরত। তিনি আজ রাতে ভারতে ফিরবেন। তাঁর মা নীতা তিওয়ারির স্বাস্থ্য প্রায়ই খারাপ থাকে, এবং তিনি অযোধ্যার কৌশলপুরী কলোনিতে থাকেন। শশাঙ্ক পরিবারের একমাত্র পুত্র ছিলেন, তাঁর এক বোন দুবাইয়ে থাকেন। শৈশব থেকেই পড়াশোনায় মেধাবী শশাঙ্ক ২০১৯ সালে জিঙ্গল বেল স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা ও জেবি অ্যাকাডেমি থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। প্রথম প্রচেষ্টায় এনডিএ-তে নির্বাচিত হয়ে ২০২৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর তিনি সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। তাঁর স্বপ্ন ছিল সেনার পোশাক পরে মাতৃভূমির সেবা করা, যা তিনি নিজের প্রাণ দিয়ে পূর্ণ করেছেন।
গ্রামবাসীরা শশাঙ্কের শহিদ হওয়ার খবরে শোকাভিভূত, তবে তাঁর বীরত্বে গর্বিত। একজন গ্রামবাসী বলেন, “আমাদের মাঝ থেকে একজন সত্যিকারের বীর উঠে এসেছেন।” ইস্টার্ন কমান্ডের লেফটেন্যান্ট জেনারেল আরসি তিওয়ারি শশাঙ্কের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বলেন, “তাঁর আত্মত্যাগ সেনাবাহিনীর নিঃস্বার্থতার প্রতীক।” সিকিমের নদীগুলো হিমবাহ গলা ও ভারী বৃষ্টির কারণে বিপজ্জনক, এবং জলবায়ু পরিবর্তন এই ঝুঁকি বাড়িয়েছে। তবু ভারতীয় সেনাবাহিনী জাতীয় নিরাপত্তার জন্য এলএসি-তে দায়িত্ব পালন করে চলেছে। শশাঙ্কের এই আত্মত্যাগ দেশজুড়ে শ্রদ্ধা অর্জন করেছে।