কিরু হাইড্রো প্রকল্প কেলেঙ্কারি: সত্যপাল মালিক হাসপাতালে, সিবিআই তদন্তে নতুন মোড়

কিরু হাইড্রো প্রকল্প কেলেঙ্কারি: সত্যপাল মালিক হাসপাতালে, সিবিআই তদন্তে নতুন মোড়

জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক কিরু হাইড্রোইলেকট্রিক প্রকল্পে ২২০০ কোটি টাকার কথিত দুর্নীতির মামলায় সিবিআই-এর চার্জশিটের পর সংবাদে রয়েছেন। সিবিআই মালিক সহ ছয়জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছে, যার মধ্যে রয়েছেন চেনাব ভ্যালি পাওয়ার প্রজেক্টস প্রাইভেট লিমিটেড (সিভিপিপিএল)-এর তৎকালীন চেয়ারম্যান নবীন কুমার চৌধুরী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এস বাবু, পরিচালক এম কে মিত্তল ও অরুণ কুমার মিশ্র, এবং প্যাটেল ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। চার্জশিট দাখিলের পর মালিকের হাসপাতালের ছবি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তিনি ১১ মে থেকে দিল্লির রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালে ভর্তি, যেখানে মূত্র সংক্রমণ, সেপসিস এবং কিডনি সমস্যার কারণে তিনি ডায়ালিসিসে রয়েছেন। তাঁর অবস্থা গুরুতর, এবং তিনি কথা বলতে অক্ষম।

কিরু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ: কিশতওয়ার জেলার ৬২৪ মেগাওয়াটের কিরু হাইড্রোইলেকট্রিক প্রকল্পে সিভিল কাজের টেন্ডারে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সিবিআই-এর তদন্তে দেখা গেছে, সিভিপিপিএল-এর ৪৭তম বোর্ড সভায় টেন্ডার বাতিল করে ই-টেন্ডারিং ও রিভার্স অকশনের মাধ্যমে পুনরায় টেন্ডারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ৪৮তম সভায় এই সিদ্ধান্ত উলটে প্যাটেল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর কাছে ২০১৯ সালে টেন্ডার দেওয়া হয়।

মালিকের অভিযোগ ও সিবিআই তদন্ত: ২০২১ সালের অক্টোবরে মালিক দাবি করেছিলেন, তাঁর রাজ্যপাল থাকাকালীন (২৩ আগস্ট, ২০১৮ – ৩০ অক্টোবর, ২০১৯) দুটি ফাইল মঞ্জুর করার জন্য তাঁকে ৩০০ কোটি টাকার ঘুষের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, যার মধ্যে একটি ছিল কিরু প্রকল্পের। তিনি এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে জানান। জম্মু ও কাশ্মীর সরকারের অনুরোধে ২০২২ সালের এপ্রিলে সিবিআই দুটি মামলা দায়ের করে, একটি কিরু প্রকল্প এবং অপরটি জম্মু-কাশ্মীর সরকারি কর্মচারীদের স্বাস্থ্য বীমা প্রকল্পে ৬০ কোটি টাকার অনিয়ম নিয়ে। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে মালিকের দিল্লি ও গুরুগ্রামের বাসভবনে সিবিআই তল্লাশি চালায়, যা তিনি “রাজনৈতিক প্রতিহিংসা” বলে সমালোচনা করেন।

মালিকের দাবি ও বর্তমান পরিস্থিতি: তল্লাশির সময় মালিক বলেছিলেন, “আমি কৃষকের সন্তান, এই ছাপা আমাকে ভয় দেখাতে পারবে না। আমার কাছে ৪-৫টি কুর্তা-পায়জামা ছাড়া কিছুই পাওয়া যাবে না।” তিনি দাবি করেন, তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে দুর্নীতিবাজদের তদন্ত না করে তাঁকে টার্গেট করা হচ্ছে। বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ মালিক হাসপাতালে ভর্তি, এবং তাঁর ম্যানেজার কে এস রানা জানিয়েছেন, তিনি অচেতন অবস্থায় আইসিইউতে রয়েছেন। এই মামলা রাজনৈতিক ও সামাজিক মহলে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে, কারণ মালিক নিজেই প্রথমে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিলেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *