১৯৯১-এর ভারত-পাকিস্তান সামরিক চুক্তি: নিশিকান্ত দুবে’র ‘দেশদ্রোহ’ প্রশ্নে কংগ্রেসের উপর চাপ

১৯৯১-এর ভারত-পাকিস্তান সামরিক চুক্তি: নিশিকান্ত দুবে’র ‘দেশদ্রোহ’ প্রশ্নে কংগ্রেসের উপর চাপ

বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর উপর তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন, যিনি বিদেশমন্ত্রী এস. জয়শঙ্করের বিরুদ্ধে অপারেশন সিন্দুরের সময় পাকিস্তানকে পূর্ব সতর্কতা দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। দুবে ১৯৯১ সালে কংগ্রেস-সমর্থিত চন্দ্রশেখর সরকারের সময়কার একটি চুক্তির কথা উল্লেখ করে পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন। এই চুক্তিতে ভারত ও পাকিস্তান সামরিক মহড়া, অভিযান ও সৈন্য চলাচলের পূর্ব তথ্য আদান-প্রদানের বাধ্যবাধকতা নিয়েছিল। দুবে এক্স-এ পোস্ট করে বলেন, “রাহুল গান্ধী জি, এটা আপনার সরকারের সময়ের চুক্তি। ১৯৯১-এ আপনার দল-সমর্থিত সরকার এই চুক্তি করেছিল যে ভারত ও পাকিস্তান যেকোনো আক্রমণ বা সৈন্য চলাচলের তথ্য আদান-প্রদান করবে। এই চুক্তি কি দেশদ্রোহ? কংগ্রেসের হাত পাকিস্তানি ভোটব্যাঙ্কের সঙ্গে।”

১৯৯১-এর চুক্তির প্রেক্ষাপট: ১৯৯১ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল সীমান্তে দুর্ঘটনাজনিত সংঘর্ষ এড়াতে এবং পারস্পরিক বিশ্বাস গড়ে তুলতে। তবে, দুবে এই চুক্তিকে ‘পাকিস্তানপন্থী’ বলে কটাক্ষ করে কংগ্রেসকে অভিযুক্ত করেছেন। কংগ্রেস পাল্টা জবাবে বলেছে, ১৯৯১-এর ফেব্রুয়ারিতে চন্দ্রশেখর সরকার থেকে কংগ্রেস সমর্থন প্রত্যাহার করেছিল এবং ৬ এপ্রিলের চুক্তির সময় কংগ্রেস ক্ষমতায় ছিল না।

রাহুল গান্ধীর অভিযোগ: রাহুল গান্ধী ১৭ মে’র একটি পোস্টে জয়শঙ্করের মন্তব্যের একটি ভিডিও শেয়ার করে বলেন, অপারেশন সিন্দুরের শুরুতে পাকিস্তানকে সতর্ক করা ‘অপরাধ’। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, এর ফলে ভারতীয় বিমানবাহিনী কতগুলি বিমান হারিয়েছে। তবে, বিদেশ মন্ত্রণালয় স্পষ্ট করেছে যে জয়শঙ্কর বলেছিলেন, অপারেশনের প্রাথমিক পর্যায়ে পাকিস্তানকে সতর্ক করা হয়েছিল, অ Stuartয়া, কিন্তু অভিযান শুরু হওয়ার পর কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি।

অপারেশন সিন্দুর ও বিতর্ক: ২২ এপ্রিল পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ৭ মে’র অপারেশন সিন্দুরে পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে ৯টি সন্ত্রাসী ঘাঁটি ধ্বংস করা হয়। রাহুল গান্ধী এই অপারেশনের সময় সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে সরকারের নীরবতার সমালোচনা করেন। বিজেপি দাবি করে, সরকার জাতীয় স্বার্থে কাজ করেছে, এবং কংগ্রেসের অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

বর্তমান পরিস্থিতি: এই বিতর্ক ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার মধ্যে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বকে আরও তীব্র করেছে। দুবে’র অভিযোগ এবং কংগ্রেসের পাল্টা জবাবে ১৯৯১-এর চুক্তি নিয়ে বিতর্ক নতুন মাত্রা পেয়েছে। তবে, এই চুক্তি কি সত্যিই দেশদ্রোহী ছিল, তা নিয়ে ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক বিতর্ক চলছে, যার কোনো চূড়ান্ত প্রমাণ নেই।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *