কর্ণের মহানুভবতা! শত্রু অর্জুনের প্রাণ বাঁচালেন কেন?

মহাভারতের কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে কর্ণ ও অর্জুন, একই মা কুন্তীর সন্তান হওয়া সত্ত্বেও পরস্পরের শত্রু ছিলেন। যুদ্ধের এক নাটকীয় মুহূর্তে, কর্ণ অর্জুনের বিরুদ্ধে তীর ছুড়তে যাওয়ার সময় দেখেন, তার তীরে অশ্বসেন নামে একটি সাপ বসে আছে। কর্ণ সাপটিকে সরাতে চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন এবং জানতে পারেন এটি কোনো সাধারণ সাপ নয়। অশ্বসেন নিজেকে পরিচয় দিয়ে বলে, সে খাণ্ডবপ্রস্থ বনে অর্জুনের লাগানো আগুনে তার মায়ের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে এসেছে। সে কর্ণের তীরের সঙ্গে অর্জুনকে আক্রমণ করতে চায়, কারণ কর্ণের তীর কখনো লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় না। এই ঘটনা যুদ্ধের এক অভূতপূর্ব মোড় নেয়, যেখানে কর্ণের সিদ্ধান্ত অর্জুনের জীবন রক্ষার কারণ হয়।
কর্ণ অশ্বসেনকে বোঝান যে, খাণ্ডবপ্রস্থ বনে অর্জুনের আগুন লাগানো বাধ্যবাধকতা ছিল, কোনো ইচ্ছাকৃত ক্ষতি নয়। তিনি বলেন, একজন যোদ্ধা হিসেবে তিনি সম্মানের সঙ্গে যুদ্ধ করতে চান, প্রতারণার মাধ্যমে নয়। কর্ণের সত্যবাদিতা ও মহানুভবতায় মুগ্ধ হয়ে অশ্বসেন তার প্রতিশোধ ত্যাগ করে এবং তীর ছেড়ে চলে যায়। এইভাবে, কর্ণ তার শত্রু অর্জুনের প্রাণ বাঁচান, যা মহাভারতের এক অনন্য নৈতিকতার উদাহরণ। এই ঘটনা দেখায়, শত্রুতা থাকলেও কর্ণের মধ্যে ছিল এক যোদ্ধার সম্মান ও ধর্মের প্রতি প্রতিশ্রুতি।