এরদোয়ানের কঠোর পদক্ষেপ: ৬৩ সেনা সদস্যের বিরুদ্ধে ফাঁসির প্রস্তুতি, ফেটোর সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগ

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান দেশের নিরাপত্তায় নিয়োজিত সেনা সদস্যদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছেন। ইস্তানবুলের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর অফিস জানিয়েছে, ২০১৬ সালের ব্যর্থ অভ্যুত্থানের সঙ্গে যুক্ত ফেতুল্লাহ গুলেনের নেতৃত্বাধীন ফেতুল্লাহিস্ট টেররিস্ট অর্গানাইজেশন (ফেটো)-র সঙ্গে সম্পর্কের অভিযোগে ৬৩ জন সামরিক কর্মী, যার মধ্যে চারজন কর্নেল রয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। শুক্রবার ভোরে দেশব্যাপী অভিযানে ৫৬ জনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এই সেনা সদস্যরা স্থল, নৌ, বিমান বাহিনী এবং জেন্ডারমেরি থেকে এসেছেন। প্রসিকিউটরদের দাবি, ফোন রেকর্ডের মাধ্যমে তাদের ফেটোর সঙ্গে যোগাযোগ শনাক্ত করা হয়েছে।
২০১৬ সালের ১৫ জুলাই তুরস্কের ইতিহাসে এক কালো রাত হিসেবে চিহ্নিত। সেনাবাহিনীর একটি অংশ অভ্যুত্থানের চেষ্টা করে, অঙ্কারা ও ইস্তানবুলে সংসদ এবং প্রেসিডেন্ট ভবনে জঙ্গি বিমান দিয়ে হামলা চালায়। ছুটিতে থাকা এরদোয়ান ভিডিও কলের মাধ্যমে জনগণকে রাস্তায় নামার আহ্বান জানান, যা অভ্যুত্থান ব্যর্থ করতে সহায়ক হয়। এই ঘটনায় ২৯০ জনের মৃত্যু হয়। অভ্যুত্থানের পর সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিচার বিভাগ ও সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে হাজার হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার বা বরখাস্ত করা হয়। এখন পর্যন্ত ২৫,৮০১ সেনা সদস্যকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে, এবং গুলেন-সম্পর্কিত স্কুল, ব্যবসা ও মিডিয়া প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে।
এরদোয়ান ও গুলেন একসময় মিত্র ছিলেন, তবে ২০১৩ সালে গুলেনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ এবং সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের পর তাদের সম্পর্ক ভেঙে যায়। গুলেন, যিনি ১৯৯৯ সাল থেকে আমেরিকায় স্বেচ্ছানির্বাসনে ছিলেন, ২০২৪ সালের অক্টোবরে মারা যান। তিনি অভ্যুত্থানে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। তবে, তুরস্ক সরকার ফেটোকে এখনও সাংবিধানিক শৃঙ্খলার জন্য বড় হুমকি মনে করে। সমালোচকদের মতে, এই গ্রেপ্তারগুলি বিরোধীদের দমনের অংশ হতে পারে, তবে তুরস্কের প্রসিকিউটররা দাবি করেন, এই ব্যবস্থা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য অপরিহার্য।