ইন্ডিগো ফ্লাইটে ভয়াবহ ঝড়, পাকিস্তানের এটিসি অনুমতি না দেওয়ায় পাইলটের দক্ষতায় রক্ষা পেল ২২৭ যাত্রীর প্রাণ

ইন্ডিগো ফ্লাইটে ভয়াবহ ঝড়, পাকিস্তানের এটিসি অনুমতি না দেওয়ায় পাইলটের দক্ষতায় রক্ষা পেল ২২৭ যাত্রীর প্রাণ

দিল্লি থেকে শ্রীনগরগামী ইন্ডিগোর ফ্লাইট ৬ই ২১৪২ গত বুধবার (২১ মে, ২০২৫) পাঠানকোটের কাছে প্রবল ঝড় ও শিলাবৃষ্টির কবলে পড়ে। ২২৭ যাত্রীসহ এই এয়ারবাস এ৩২১ নিও বিমানে তীব্র ঝাঁকুনির সম্মুখীন হয়। পাইলট ঝড় এড়াতে প্রথমে ভারতীয় বিমানবাহিনীর উত্তরাঞ্চলীয় নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের কাছে আন্তর্জাতিক সীমান্তের দিকে রুট পরিবর্তনের অনুমতি চান, কিন্তু তা প্রত্যাখ্যাত হয়। এরপর পাইলট লাহোর এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের (এটিসি) কাছে পাকিস্তানের আকাশসীমায় সাময়িক প্রবেশের অনুমতি চান, কিন্তু তাও প্রত্যাখ্যান করা হয়। ফলে বিমানটি মূল পথেই চলতে বাধ্য হয়, যেখানে তীব্র ঝড়ের মুখোমুখি হয়।

ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল এভিয়েশন (ডিজিসিএ) জানায়, ৩৬,০০০ ফুট উচ্চতায় বিমানটি ঝড়ে পড়লে অটোপাইলট বন্ধ হয়ে যায়, এবং এঙ্গল অফ অ্যাটাক ফল্ট, ব্যাকআপ স্পিড স্কেলের অবিশ্বস্ততা ও স্টল সতর্কতার মতো একাধিক প্রযুক্তিগত সমস্যা দেখা দেয়। বিমানের ডিসেন্ট রেট একসময় ৮,৫০০ ফুট প্রতি মিনিটে পৌঁছে। এই সঙ্কটময় মুহূর্তে পাইলটরা ম্যানুয়ালি বিমান নিয়ন্ত্রণ করে। তারা শ্রীনগর এটিসি-তে ‘প্যান-প্যান’ জরুরি সংকেত পাঠান, যা মে-ডে-এর তুলনায় কম গুরুতর কিন্তু জরুরি পরিস্থিতির ইঙ্গিত দেয়। রাডার ভেক্টরের সাহায্যে বিমানটি সন্ধ্যা ৬:৩০-এ শ্রীনগরে নিরাপদে অবতরণ করে।

অবতরণের পর পরিদর্শনে দেখা যায়, শিলাবৃষ্টির কারণে বিমানের নাকের রেডোম (রাডার কভার) ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইন্ডিগোর বিবৃতিতে বলা হয়, “ফ্লাইট ও কেবিন ক্রু প্রতিষ্ঠিত প্রোটোকল মেনে বিমানটি নিরাপদে অবতরণ করায়। যাত্রীদের সুস্থতা ও স্বাচ্ছন্দ্যকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।” বিমানটি পরিদর্শন ও মেরামতের পরই পরিষেবায় ফিরবে। ডিজিসিএ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে, এবং পাইলটদের দক্ষতার জন্য ব্যাপক প্রশংসা হচ্ছে। তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ সাগরিকা ঘোষ, যিনি বিমানে ছিলেন, বলেন, “এটি ছিল মৃত্যুর মুখোমুখি অভিজ্ঞতা। পাইলটের প্রতি কৃতজ্ঞতা।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *