কেন নবতপায় নয় দিন আগুন বর্ষণ? জেনে নিন সম্ভাব্য ক্ষতির পরিধি

কেন নবতপায় নয় দিন আগুন বর্ষণ? জেনে নিন সম্ভাব্য ক্ষতির পরিধি

মে মাস মানেই প্রচণ্ড গরম আর লু; তবে দক্ষিণ-পূর্ব সাইক্লোনের কারণে আবহাওয়া স্বস্তিদায়ক থাকলেও সপ্তমী জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক ক্যালেন্ডারে নবতপা বা নবতপা–এর ভয়ে জনজীবন কণ্ঠরুদ্ধ। জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে, বাংলা মাস জেঠের প্রথম নয় দিন, যখন সূর্য ‘রোহিনী নক্ষত্রে’ অবস্থান করে, তখনই ক্ষণে ক্ষণে আগুনমাখা রশ্মি পৃথিবীর কোলে ছড়িয়ে দেয় তীব্র তাপ। এই বছর ২৫ মে (২০২৫) ভোর ৩:২৭ মিনিটে সূর্য রোহিণী নক্ষত্রে প্রবেশের লগ্নে প্রারম্ভ হবে, যা ৮ জুন পর্যন্ত থাকবে; কিন্তু প্রথম নবদিনেই হবে সর্বোচ্চ গরম

তবে জ্যোতিষের ব্যাখ্যা ছাপিয়ে বিজ্ঞান বিশ্বে যুক্তি সমানভাবে জোরদার। দেশের শীর্ষ বৈজ্ঞানিকদের মতে, “পৃথিবী যখন সূর্যের সবচেয়ে কাছে আসে, তখন ভূমিতে পড়া রশ্মি সরাসরি ও ঘন হয়—ফলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়,” বলেছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানি প্রফেসর ডাঃ শুভঙ্কর ঘোষ। যদিও রোহিণী নক্ষত্রের অবস্থানের সাথে সরাসরি কোনও কারণনিষ্ঠ সম্পর্ক নেই, তবু প্রাকৃতিক জ্যোতির্মাপ পরিক্রমা এই নবতপায় তীব্রতা বাড়ায়।

কৃষিক্ষেত্রে নবতপার গুরুত্ব অপরিসীম। “নবতপায় যে তীব্র গরম হয়, সেটি বিভিন্ন কীটপতঙ্গ ও বিষাক্ত প্রাণীর উৎপাদনশীলতা কমিয়ে আনে,” বললেন বরিশাল জেলার ধানচাষি মোঃ আলী। এর ফলে পরবর্তী বর্ষায় পর্যাপ্ত বৃষ্টি হলে মাটি শস্যসুরক্ষায় পর্যাপ্ত সিক্ত থাকে, ফসল রক্ষা হয়। তবে যদি নবতপায় পর্যাপ্ত তাপ না পড়ে, তাহলে বর্ষাকালে জল-বর্ষণ অনিয়মিত হয়ে ফসলের ক্ষতি বাড়তে পারে।

সামাজিক সংস্কৃতিতে নবতপায় শীতল পানীয়, সত্তু, পাখা, ছাতা দান, পথের ধারে পায়ু স্থাপন ইত্যাদির মাধ্যমে অসহায়দের তাপসন্ত্রাস থেকে মুক্তি দেওয়ার রেওয়াজ। অন্যদিকে নির্মাণকাজ, যাত্রা, মাংসাহার, মদ-সদৃশ এবং বিতর্ক এড়িয়ে চলার প্রথা থাকে। ফলে নবতপা শুধুমাত্র শারীরিক নয়, সামাজিক ও কৃষিজীবনকেও সুসংহত রাখে—এটিই হয়তো প্রকৃতির “নবতপা” উপহার।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *