আম শুধুই ফল নয়, এক পরিবেশবান্ধব বিপ্লব—মুকেশ ও নীতা আম্বানির উদ্যোগ

আম শুধুই ফল নয়, এক পরিবেশবান্ধব বিপ্লব—মুকেশ ও নীতা আম্বানির উদ্যোগ

জামনগরের রিফাইনারি থেকে আমের আমবাগানে—মুকেশ আম্বানির এক অনন্য যাত্রা

যেখানে সবাই মুকেশ আম্বানিকে তেল, টেলিকম আর রিটেইল খাতে সীমাবদ্ধ মনে করেন, সেখানে তিনি নিঃশব্দে গড়ে তুলেছেন এক ব্যতিক্রমী সাফল্য—বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ আম রপ্তানিকারক হিসেবে। গুজরাটের জামনগরে অবস্থিত ‘ধীরুভাই আম্বানি লখীবাগ আমরাই’ আজ ভারতের আম রপ্তানির অন্যতম কেন্দ্র, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য।

এই উদ্যোগের সূচনা ১৯৯৭ সালে, যখন পরিবেশদূষণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে রিলায়েন্স তাদের জামনগরের রিফাইনারির আশপাশে প্রাকৃতিক ভারসাম্য ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয়। জমির লবণাক্ততা ও জলর নিম্নমান থাকা সত্ত্বেও, ড্রিপ ইরিগেশন ও আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির সহায়তায় রিলায়েন্স এক বিপ্লব ঘটায়। ফলাফল—লাখ লাখ আমগাছ এবং প্রতিবছর হাজার হাজার টন উৎপাদন।

এই বাগান থেকে উৎপন্ন আম আমেরিকা, ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্যের বাজারে পাঠানো হয়। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভারত থেকে আমেরিকায় প্রায় ২,০০০ মেট্রিক টন আম রপ্তানি হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ১৩০ শতাংশ বেশি। এর অন্যতম কারণ—মুম্বাইয়ের বিকিরণ কেন্দ্র, যা আমেরিকান মানদণ্ড অনুযায়ী আম প্রক্রিয়াজাত করে। যদিও মে ২০২৫-এ ডেটা ত্রুটির কারণে সাময়িকভাবে একটি চালান ফেরত যায়, ১০ মে-র পর সবকিছু স্বাভাবিক হয়েছে।

এই সব কিছুর পেছনে নিয়মিত তদারকি করেন নীতা আম্বানি। শুধুই বাগান নয়, স্থানীয় কৃষকদের প্রশিক্ষণ, প্রতি বছর লক্ষাধিক গাছ বিতরণ এবং সামাজিক সচেতনতা কর্মসূচিও এই প্রকল্পের অঙ্গ। মুকেশ আম্বানির ভাষায়, “এটি শুধুই আমের বাগান নয়, এটি আমাদের পরিবেশ ও সমাজের প্রতি একটি দায়বদ্ধ প্রতিশ্রুতি।”

আজ, যখন আমেরিকা ভারতের আমের সবচেয়ে বড় গন্তব্য হয়ে উঠছে, তখন নিঃসন্দেহে বলা যায়—এই সাফল্যের পেছনে মুকেশ আম্বানি এবং তাঁর বাগানের অবদান অনস্বীকার্য।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *